আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের ঠিক দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে তালেবান। শহরটি থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি। শুক্রবার রাতেও একটি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নেয় জিহাদিরা। যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, তালেবান যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে কিছুদিনের মধ্যেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে রাজধানী। আর আফগানিস্তানের বর্তমান সংকটের জন্য ওয়াশিংটনের ভুল সিদ্ধান্তকে দায়ী করছে রাশিয়া।
ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিবর্তন হচ্ছে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি। একের পর এক শহরের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সরকার। দখলে নেয়া শহরগুলোতে, প্রশাসনের কর্মকর্তা আর সরকার সমর্থক যোদ্ধাদের বন্দি করছে তারা।
শুক্রবার (১৩ আগস্ট) হেরাতের সিংহ নামে পরিচিত মিলিশিয়া নেতা ইসমাইল খানকে আটক করে তারা। এ অবস্থায় আতঙ্ক চেপে বসেছে সাধারণ আফগানদের মধ্যে। তালেবানের হাত থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ প্রার্থনাও হচ্ছে মসজিদগুলোতে। সাধারণ মানুষ বলছে, আগে তারা তালেবান শাসন দেখেছে, তাই আর সেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে চান না তারা।
আফগানিস্তানের ৩৪ প্রদেশের মধ্যে বেছে বেছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। শুক্রবার রাতে লোগারের প্রাদেশিক রাজধানী পুল ই আলম দখলে নেয় তারা। শহরটি পার হলেই কাবুল সীমান্ত। পেন্টাগনের শঙ্কা, চারপাশ থেকে রাজধানীকে অবরুদ্ধ করে ফেলবে তালেবান।
পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলছেন, আমরা যা ধারণা করেছিলাম তার চেয়েও দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে তালেবান। কাবুলকে এখন রীতিমতো আইসোলেশনের চেষ্টা করছে তারা। যেকোনো সময় এটি বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
আফগান বাহিনী পিছু হটার পর তাদের সামরিক ঘাঁটি থেকে বিপুল পরিমাণ সমরাস্ত্র দখলে নিয়েছে তালেবান। শুক্রবার হেরাতের ঘাটিতে সামরিক হেলিকপ্টার, রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। এ পরিস্থিতিতে অবিলম্বে হামলা বন্ধের জন্য তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, তালেবান কাবুল দখলে নেয়ার আগেই যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছে তা নজিরবিহীন। এই মুহূর্তে সংঘাত বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই বিবদমান পক্ষগুলোর উচিত দ্রুত সিদ্ধান্তে আসা। নইলে চরম মানবিক বিপর্যয় ঘটবে আফগানিস্তানে।
এমর পরিস্থিতিতে আফগান আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য সীমান্ত খুলে দিতে প্রতিবেশি দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
মীর মুশফিক আহসান যমুনা নিউজ
Leave a reply