আখাউড়া প্রতিনিধি:
খন্দকার মোশতাক ও খুনি জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার ষড়যন্ত্র ও হত্যাকারী। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য তারা যে আইন পাস করেছিলেন, জঙ্গলের পশুরাও এমন আইন করেনা- বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ রোববার (১৫ আগস্ট) সকালে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জাতীয় শোক দিবসের ভার্চুয়াল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত চলেছে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার চক্রান্ত। এমনকি খবরের কাগজে পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর নাম লেখা যেত না। আওয়ামীলীগ যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতারা প্রাণ হারিয়েছে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করতে গিয়ে।
আইন মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে তারা রাজাকার-আলবদর কে দেশ শাসন করার রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছিল। আর সে কাজটি খুনি জিয়াউর রহমান থেকে শুরু হয়েছিল। তিনি তার প্রথম প্রধানমন্ত্রী করেন রাজাকার শাহ্ আজিজুর রহমানকে। তিনি মন্ত্রী বানান যারা রাজাকার ছিলেন। যারা আইয়ুব খানের মন্ত্রী ছিলেন, যারা ইয়াহিয়া খানের দোসর ছিলেন।
জিয়াউর রহমান সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সঙ্গে জড়িত তা নয়। এটাও পরিষ্কার যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাতেও সে বিশ্বাস করতো না। এমনকি খুনি জিয়াউর রহমান এটাও প্রমাণ করে দিয়ে গেছে সে আইনের শাসনে বিশ্বাসী ছিল না।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন খুনি জিয়াউর রহমান। মন্ত্রী বলেন, আমাদের এমন অপমানকর কালো অধ্যায় সৃষ্টিকারীদের আমি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি।
আইন মন্ত্রী বলেন, খুনি মোশতাক ও তার সহচর খুনি জিয়াউর রহমান এবং অন্যান্যরা এতই বেশি ভীত ছিল যে, তারা বঙ্গবন্ধু কে খুন করেছে তা প্রমাণ করার জন্য একটা আইন পাস করে। ওই আইনে বলা ছিলো, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার করা যাবে না।
আইনমন্ত্রী ব্যঙ্গ করে বলেন, জঙ্গলের পশুরাও এমন আইন করে না। আনিসুল হক বলেন, এমন আইন থেকেই প্রমানিত হয় যে, খন্দকার মোশতাক এবং জিয়াউর রহমানসহ তাদের অন্যান্য দোসররা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার ষড়যন্ত্র ও হত্যাকারী ছিল।
তার কারণ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারা হত্যা না করলে তাদের এই আইন করার কোন প্রয়োজন হতো না। তারা তাদের নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এই আইন প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা এই আইন বাতিল করে। সংসদে এই আইন বাতিল করার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের ১৭জন সদস্যের হত্যার বিচারের পথ সুগম হয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ওই হত্যার মামলা বিচার কাজ শুরু করেন আমার পিতা সিরাজুল হক। ২০০২ সালে আমার পিতার মৃত্যুর পর ২০০৯ সালে আমার মাধ্যমে এই মামলা সর্বোচ্চ আদালতে শেষ হয়।
এসময় তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যারা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল বাংলার মানুষের কাছে তাদের প্রকৃত চেহারা উন্মোচনের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হবে। করোনার প্রকোপ কমে আসলে এই কমিশন গঠন করা হবে এবং তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে।
আনিসুল হক বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের অঙ্গীকার আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি যতক্ষণ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সকল খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদেরকে ধরে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
/এসএইচ
Leave a reply