আবারও তালেবানের দখলে আফগানিস্তান। ক্ষমতার হস্তান্তর নিয়ে সরকারের সাথে চলছে তালেবানদের দরকষাকষি। এর মধ্যেই দেশ ছেড়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। যাওয়ার আগে কোনো দিকনির্দেশনাও দিয়ে যাননি তিনি। তবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনে বেশ মসৃণই ছিল শিক্ষক থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা ঘানির দুই দশকের রাজনৈতিক জীবন।
আফগানিস্তানে চলমান অস্থিরতার বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় চরিত্রে এখন দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। তালবানের ভয়ে দেশ ছেড়ে চলে গেলেও শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে হঠাৎ করেই রাজনীতিতে পা রাখা এই প্রেসিডেন্টের ব্যর্থতার চেয়ে সফলতার পাল্লাই ভারি।
১৯৪৯ সালে লগার প্রদেশে জন্ম নেয়া আশরাফ ঘানি বড় হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে পড়ালেখা শেষে ফিরে আসেন কাবুলে। ১৯৭৩ থেকে ৭৭ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরপর ডেনমার্ক হয়ে আবারও পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে গিয়েও বেছে নেন প্রিয় শিক্ষকতা পেশাকেই।
বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে ৭২ বছর বয়সী আশরাফ ঘানির। দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে ২০০১ সালে হঠাৎ করেই রাজনীতিতে পা রাখেন তিনি। যোগ দেন তৎকালিন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে ২০০২ সালে দায়িত্ব নেন অর্থমন্ত্রী হিসেবে। এর সাত বছরের মাথায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াই করেন। সেবার হারলেও ২০১৪ সালে ঠিকই জনগণ তার হাতে দেশ শাসনের দায়িত্বভার তুলে দিতে ভুল করেনি। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষতায় বসেন তিনি।
দীর্ঘ এই সময়ে বরাবরই সরব ছিলেন তালেবানের বিরুদ্ধে। দেশকে যুদ্ধের হাত থেকে রক্ষায় প্রতিবেশী পাকিস্তানের উদ্যোগে দফায় দফায় তালেবান নেতাদের সাথে শান্তি আলোচনা করেন আশরাফ ঘানি। পরবর্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগেও কাতারে আলোচনায় বসেন।
মূলত, আফগানিস্তানের রাজনীতিতে তিনি পরিচিতি পান তালেবানের বিরুদ্ধে কট্টর অবস্থানের কারণে। এজন্য, তালেবানদের ক্ষোভেরও কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন আশরাফ ঘানি।
Leave a reply