করোনা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিশুরাও; ক্রমেই বাড়ছে শিশু করোনা রোগী। সদ্যজন্ম নেওয়া শিশুদের দেহেও মিলছে করোনা ভাইরাস। কোভিডে আক্রান্ত শিশুদের যত্ন নিতে হবে বয়স্কদের চেয়ে আলাদা পদ্ধতিতে। তাই রোগীর সংখ্যা ও চিকিৎসার ধরন বিবেচনায় এখন থেকেই প্রতিটি কোভিড হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ড জরুরি বলে মত চিকিৎসকদের।
মাত্র ১৩ দিন বয়সের শিশু নূর মোহাম্মদ পৃথিবীর আলো বাতাস ভালো করে টের পাওয়ার আগেই আক্রান্ত হয়েছে করোনায়। অজানা শঙ্কায় কাটছে মায়ের জীবনের সবচেয়ে আনন্দঘন সময়টা। প্রথম সন্তানকে নিয়ে শিশু হাসপাতালের করোনা ইউনিটেই অতিবাহিত হচ্ছে নতুন মায়ের দিন-রাত। ছোট্ট শরীরে ক্যানোলা বসানোর জায়গা বের করা কঠিন। শিশু নূর মোহাম্মদের যখন মায়ের বুকে দুধ খেতে শেখার কথা, তখনই যেতে হচ্ছে ডাক্তারের নানা পরীক্ষা নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে।
আরেক শিশু আরশাদুল্লাহর বয়স দুই মাস। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে করোনা টেস্টে পজেটিভ আসে। আরশাদুল্লাহর বাবা-মা বা পরিবারের কেউই করোনায় আক্রান্ত নয়।
৬ বছর বয়সী মাহিনের অবস্থা ক্রমেই অবনতি দিকে। দিনের পুরোটা সময়ই দিতে হচ্ছে অক্সিজেন। হাতের অপারেশনের পর তার জ্বর ও শ্বাসকষ্টের মাত্রা বেড়েই চলেছে। হাতের ক্ষতের চিকিৎসা করতে এসে শিশু হাসপাতালেই করোনা আক্রান্ত হয়েছে বলে দাবি তার অভিভাবকের।
২০ জন শিশু ভর্তি আছে শিশু হাসপাতালের করোনা ইউনিটে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমনিতেই কম, তাই তাদের চিকিৎসার ধরনও আলাদা। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঠেকানোই মূল লক্ষ্য চিকিৎসকদের।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সাগর মোল্লা যমুনা টেলিভিশনকে বলেন, কোভিড আক্রান্ত সে সকল শিশুকে আমরা রোগী হিসেবে পাচ্ছি তাদের জ্বর ও কাশি রয়েছে। যে সকল শিশুর হৃৎপিণ্ড ও কিডনির সমস্যা রয়েছে তারা করোনায় বেশি আক্রান্ত হয়। কিশোররাও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে।
শিশু হাসপাতাল ছাড়া ঢাকা মেডিকেলে শিশুদের ২০ টি শয্যা। মোট ৪০ শয্যাতেই ভর্তি শিশু করোনা রোগী।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. প্রবীর কুমার সরকার বলেন, মোট জনসংখ্যার ৩৯ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে। এই বিশাল জনসংখ্যার জন্য কোভিড ইউনিটে বেড সংখ্যা মাত্র ৪০ টি।
চিকিৎসকদের শঙ্কা, এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে চড়া মূল্য দিতে হতে পারে।
Leave a reply