সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় পুরো ল্যাবটি এখন পরিত্যক্ত। ফলে, গত পাঁচ দিন যাবত করোনার নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। এতে সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোর জেলা থেকে নমুনা পরীক্ষা করাতে আসা মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
ল্যাবটিতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় পরীক্ষাকৃত নমুনার অস্বাভাবিক ফলাফল দিতে শুরু করে পিসিআর মেশিন। শতকরা গড়ে ৮০ টি নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পজেটিভ আসায় বন্ধ রাখা হয় নমুনা পরীক্ষা। এতে গত মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) থেকে এক হাজারেরও বেশি নমুনা পরীক্ষার জন্য জমে যায় ল্যাবটিতে। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার হতে নতুন করে নমুনা নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ল্যাব নমুনা না নেয়ায় নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে পাবনা নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন তিন জেলার রোগীরা, আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ব্যাপকভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার। সিরাজগঞ্জের একমাত্র পিসিআর ল্যাবটি দ্রুত চালুর দাবি জানিয়েছেন তিন জেলার রোগীরা।
বেলকুচি থেকে আসা আসাদুজ্জামান বলেন, আমি গত ১৬ আগস্ট নমুনা দিয়েছি। ১৮ তারিখে আমার রেজাল্ট দেয়ার কথা কিন্ত আজ ২১ তারিখ এখনো রেজাল্ট পাচ্ছি না । এদিকে আমি পল্লী বিদ্যুতে চাকরি করি। করোনার রেজাল্ট ছাড়া আমাকে অফিসে যেতে দেবে না। আমি এখন কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না।
এনায়েতপুর থেকে আসা মাসুদ রানা বলেন, আমি আজ তিন ধরে ঘুরছি নমুনা দেয়ার জন্য। কিন্ত, ল্যাব বন্ধ থাকায় আমি নমুনা দিতে পারছিনা। এতো দুর থেকে প্রতিদিন আসা অনেক কষ্টের। কবে ঠিক হবে তাও সঠিক করে বলেনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. শফিউল ইসলাম যমুনা
নিউজকে বলেন, ঈদের পর থেকে করোনার নমুনা পরীক্ষার চাপ ক্রমেই বাড়ছে। এ অবস্থায় ল্যাবে সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। সংক্রমণের কারণে ল্যাবে করোনা পরীক্ষার ফলাফলে অস্বাভাবিক রিডিং আসায় পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে দক্ষ লোক আনা হয়েছে। তারা দ্রুত কাজ করার চেষ্টা করছেন। আশা করি আগামী তিন দিনের মধ্যে ল্যাব চালু করা যাবে।
সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ ডা. শর্মিলী পাল
যমুনা নিউজকে বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে তিনটি জেলার নমুনা দুইটি কেবিনেট এবং একটি মেশিন দিয়ে সংগ্রহ
এবং পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখানে নমুনা পরীক্ষার চাপ ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। এজন্য অতিরিক্ত আরও একটি
কেবিনেট এবং একটি মেশিনের প্রয়োজন। তাহলে একটিতে ভাইরাস ছড়ালেও অন্যটি দিয়ে পরীক্ষা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে।
/এসএইচ
Leave a reply