নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ:
নওগাঁর মহাদেবপুরে মিঠুন চৌধুরী (২৭) নামে এক নার্সারি ব্যবসায়ীকে ৩ দিন আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামীকে উদ্ধার করতে গেলে স্ত্রীর মাথার চুল কেটে নির্যাতন করে অভিযুক্ত প্রভাবশালী রুহুল আমীন।
১৫ আগস্ট মিঠুনকে আটক করা হয়। নির্যাতন করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ১৮ আগস্ট তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। লোকলজ্জা ও ভয়ভীতি দেখানোর ফলে ঘটনা গোপন রাখে ভুক্তভোগীরা। ছাড়া পেয়ে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন তারা।
দরিদ্র মিঠুন চৌধুরীর বাড়ি পত্নীতলা উপজেলার উত্তর মামুদপুর গ্রামে। তার বাবার নাম কৃষ্ণ চৌধুরী। ঘটনা জানতে পেয়ে শনিবার তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মারাত্মক আহত অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী বিছানায় শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন।
ঘটনা জানতে চাইলে মিঠুন বলেন, মহাদেবপুর উপজেলার বোয়ালমারী এলাকার চালকল মালিক রুহুল কিছুদিন আগে মিঠুনের নার্সারি থেকে গাছের চারা কিনেন। আরও চারা কেনার জন্য অগ্রিম কিছু টাকা দেন। সেই চারা সময় মত দিতে না পারায় ১৫ আগস্ট সকালে মিঠুনকে ধরে নিয়ে যায় রুহুল। এরপর থেকে চালকলের ভেতর আটক রাখে। মারপিট করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়।
মিঠুন জানান, আটকের ৩ দিন পর তার স্ত্রী শ্যামলী রানীকে ১০ হাজার টাকাসহ বয়লারে আসার জন্য খবর পাঠায় রুহুল। খবর পেয়ে শ্যামলী রাণী সোনার গহনা বন্ধক রেখে টাকা নিয়ে ওই চালকলে হাজির হয়। এ সময় মিঠুনকে আটক রাখায় রুহুলের সাথে তর্ক-বিতর্ক হয় শ্যামলীর। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে মাথার চুল কেটে শ্যামলীকেও নির্যাতন করে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়।
৩ দিনের নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে মিঠুন জানান, প্রভাবশালী রুহুল আটক রেখে হাতুড়ি ও লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। হাতের আঙুল জখম করেছে। ছাড়া পেয়ে মহাদেবপুর থানার এসআই সাইফুল ইসলামকে বিষয়টি জানায় ভুক্তভোগীরা। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করের তিনি।
এ বিষয়ে এসআই সাইফুল জানান, মিঠুন ও তার স্ত্রী শ্যামলী থানায় অভিযোগ না দেয়ায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।
মহাদেবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ শনিবার রাতে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগের কিছুটা সত্যতা পাওয়া গেছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা হলেই আসামি গ্রেফতারে অভিযানে নামবে পুলিশ।
ইউএইচ/
Leave a reply