শিক্ষকের অবহেলায় কোভিডে আক্রান্ত স্কুল শিক্ষার্থীরা!

|

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে বই পড়তে মাস্ক খুলেছিলেন। কোভিডের টিকা না নিয়েই শ্রেণিকার্যক্রম শুরু করেছিলেন ওই শিক্ষক। এরপর সেই ক্লাসের অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থী কোভিডে আক্রান্ত হয়। শুধু তাই-ই না, আক্রান্ত সেসব শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ওই স্কুলের অন্য শিক্ষার্থীরাও আক্রান্ত হয়েছে কোভিডে। আর তাদের মাধ্যমে ভাইরাসটি পৌঁছে গেছে সেসব শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্য এবং কমিনিউটির মধ্যে।

কোভিডে মৃত্যু ও ভাইরাসের বিস্তার নিয়ে সাম্প্রতিক এক কেইস স্টাডিতে এসব তথ্য জানিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। সেখানে বলা হয়, ঘটনাটি গত মে মাসের। সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের পরিচালক ডা. রোসেল ভলনস্কি বলেন, যেসব শিশুদের এখনও টিকা দেয়া যায়নি তারা কতটা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে তার একটি উদাহরণ এটি।

সিডিসির ওই কেইস স্টাডিতে বলা হয়, উপসর্গ থাকার পরও ওই শিক্ষক শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেন, তিনি এর আগে টিকাও নেননি।। কোভিডের উপসর্গগুলোকে তিনি অ্যালার্জির উপসর্গ ভেবেছিলেন। এগুলো খুবই অপেশাদারি আচরণ। জানা গেছে, ওই ক্লাসের ২২ শিক্ষার্থীর ১২ জনই কোভিডে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে প্রথম সারিতে বসা দশ জনের আট জনই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিল। সব মিলিয়ে সে শিক্ষকসহ ওই স্কুলের মোট ২৭ জন কোভিডে আক্রান্ত হয় ওই ঘটনার পর। তবে স্কুলের সবাইকে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

অথচ শিক্ষার্থীদের কোভিড থেকে রক্ষা করতে সব ধরণের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো ওই স্কুলে। ক্লাসরুমে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার মাস্ক পরা ছিল বাধ্যতামূলক। শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে বসানো হয়েছিলো ৬ ফুট দূরত্বে। এছাড়া প্রতিটি ক্লাসরুমেই ছিল পোর্টেবল এয়ার ফিল্টার, আর বাতাস চলাচলের জন্য খোলা রাখা হয়েছিলো দরজা-জানালা।

সংক্রমিত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানিয়েছেন, স্কুলে মাস্ক পরিধানসহ সামাজিক দূরত্বের সকল নিয়ম মানা হয়। কিন্তু উচ্চস্বরে পড়ানোর প্রয়োজন হওয়ায় সেই শিক্ষক কয়েকবার তার মাস্ক খুলেছিলেন বলে বাচ্চারা জানিয়েছে।

সিডিসির পরিচালক ডা. রোসেল ভলনস্কি গত শুক্রবার হোয়াইট হাউজের কোভিড ব্রিফিংয়ে বলেন, স্কুলে বাচ্চাদের কীভাবে নিরাপদে রাখার উপায় আমরা জানি, আর এজন্য যা প্রয়োজন তার সবই আমাদের আছে। মহামারীর মধ্যে স্কুল চালাতে প্রথমেই টিকা নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু বাজারে যেসব টিকা আছে সেগুলোর কোনোটিই ১২ বছরের কম বয়সীদের দেয়া যায় না। সে কারণেই শিক্ষকদের টিকা গ্রহণ বাধ্যতামূলক ছিলো।

জানা গেছে ওই স্কুলের যেসব বাচ্চা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিল তাদের অনেকের বাবা-মা টিকা নেয়া সত্ত্বেও পরে আবারও কোভিডে আক্রান্ত হন। যাদের মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রাধান্য লক্ষ্য করা গেছে। টিকা নিয়েও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ঠেকানো মুশকিল- এ ঘটনা তারই প্রমাণ দিচ্ছে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply