স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠি পেয়ে ক্ষুব্ধ পুলিশ কর্মকর্তারা। জেলায় প্রতিদিন যেসব মামলা বা জিডি হয়, জেলা প্রশাসকদের কাছে তা রোজ জানাতে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়। পুলিশ আইনের আওতায় এই তথ্য দিতে বাধ্য বলেও চিঠিতে বলা হয়। তবে, পুলিশ বলছে, এসব তথ্য আদালতে জানানো হয়। ডিসিদের জানাতে বাধ্য নন তারা। এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আইজিপি।
ঘটনার শুরু চারমাস আগে। মাদারীপুর জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপারের কাছে মৌখিকভাবে পুলিশের রোজকার মামলা-জিডির তথ্য চান। শুধু তাই নয়, গোয়েন্দা ইউনিট এসবি পুলিশের ডেইলি রিপোর্টগুলোও ডিসিকে জানাতে বলেন তিনি। ডিসির সেই দাবি, তাৎক্ষণিক নাকচ করে দেন এসপি। সেই আলোচনা গড়ায় সচিবালয় পর্যন্ত।
সবশেষ গত রোববার (২৯ আগস্ট) পুলিশ সদর দফতরে একজন উপসচিবের স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যাতে বলা হয়, জেলা পুলিশ সুপার নিয়ম মেনে মামলা, জিডি ও দৈনন্দিন রিপোর্ট ডিসি অফিসে না জানানোয়, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন থাকায় তা এসপিদের মানার নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে বেশ মনোক্ষুণ্ন পুলিশ কর্মকর্তারা।
বেশ কয়েকজন পুলিশ সুপার যমুনা টেলিভিশনকে জানিয়েছেন মামলার তথ্যাদি নিয়মিত আদালতে জানানো হয়। পাশাপাশি একেবারেই অভ্যন্তরীণ এসবি ডেইলি রিপোর্ট, ডিসিদের জানানোর কোনো বিধান নেই।
এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের এক অনুষ্ঠানে আইজিপির মন্তব্য জানতে চাইলে, তিনি জানান এটা নিয়ে কথা বললে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ১৯২ নম্বর ধারায় যেভাবে উল্লেখ্য করা হয়েছে তা মোটেও কঠিন কোনো বিষয় না, এটা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়ারও দরকার নাই, এটা পড়লেই আপনার বুঝে যাবেন। এটা নিয়ে খামাখা কোনো বিভ্রান্তি তৈরি করতে চাই না।
সাবেক কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাধীনতার পর থেকে এরকম নিয়ম-কানুনের প্রচলন নেই। তাই, এইরকম চিঠি প্রশাসন ও পুলিশ সার্ভিসের মধ্যে যাতে সমন্বয়হীনতার কারণ না হয় তা নিয়ে দ্রুত আলোচনায় বসা উচিত।
পুলিশের সাবেক অতিরিক্তি আইজিপি মোখলেসুর রহমান বলেন, কেন এ রকম একটা সেটেল্ড ইস্যু নিয়ে আবারও চিঠি দিয়েছে তা আমার বোধগম্য না। পুলিশ রিপোর্ট তো প্রেরণ করতে হয়ই, তবে আলাদা করে কোনো কিছু দেয়া হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। পুলিশ ডিপার্টমেন্ট মন্ত্রণালয়ের বসে সাথে কথা বলে এই সমস্যার সুরাহা করতে পারেন।
পুলিশ সদরে কথা বলে জানা গেছে, শীঘ্রই এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি ব্যাখ্যা পাঠাবেন কর্মকর্তারা।
/এসএইচ
Leave a reply