যে কারণে সরকার গঠনে বিলম্ব তালেবানের

|

তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ও অন্যান্য তালেবান নেতৃবৃন্দ।

আবারও সরকার গঠনের তারিখ পিছিয়েছে তালেবান। আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠনের তারিখ পেছাল তারা।

গত আগস্টে কাবুল দখলের পর তালেবান ঘোষণা করেছিল, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শেষ হলেই সরকার গঠন করবে তারা। সে অনুযায়ী গত শুক্রবার সরকার গঠনের ঘোষণাও দিয়েছিল তালেবান। কিন্তু সরকার গঠনের তারিখ আকস্মিকভাবেই একদিন পিছিয়ে দেন তালেবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ। তিনি গত শনিবার মন্ত্রিসভা গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

কিন্তু শনিবারেও ঘোষণা দেয়া হয়নি তালেবান সরকার ও মন্ত্রীসভার সদস্য কারা হচ্ছেন। নতুন নির্দেশনা আসে আগামী সপ্তাহে নতুন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়া হবে। এভাবে কেন বারবার সরকার গঠন পেছানো হচ্ছে তার কোনোই ব্যাখ্যা দেননি তালেবান মুখপাত্র।

তবে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য সরকার গঠনের ব্যাপারে এখনও একমত হতে পারেনি তালেবান। সরকার গঠনে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন গোষ্ঠীর সাথে আলোচনার
জন্য গঠিত কমিটির সদস্য খালিল হাক্কানি এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন। তিনি বলেন, তালেবান নিজেরাই সরকার গঠন করতে পারত। কিন্তু তারা এখন এমন একটি সরকার গঠন করতে চাইছে যেখানে আফগানিস্তানের সকল দল এবং গোষ্ঠী সমানভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।

এক টুইটার পোস্টে খালিল হাক্কানি জানিয়েছেন, তালেবানরা নিরাপত্তা নিশ্চিতে সক্ষম হলেও তরুণ, শিক্ষিত আফগানদের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা ছাড়া কার্যকর সরকার পরিচালনা তাদের পক্ষে এই মুহুর্তে সম্ভব না। তারা চাইছে তথাকথিত প্রবীণ রাজনীতিবিদদের পুরোপুরি সরিয়ে দিতে যাতে একটি আধুনিক ও সময়োপযোগী সরকার গঠন করতে পারে।

এদিকে, যুদ্ধক্ষেত্রে দুর্দান্ত রকমের দক্ষ হলেও সরকার পরিচালনায় তালেবানের অভিজ্ঞতা প্রায় শূণ্যের কোটায়। তাছাড়া দ্বিতীয় দফায় সরকার গঠনের জন্য নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রমাণের চেষ্টাও করছে তালেবান। এরই মধ্যে নিজেদের কঠোর মনোভাব থেকে সরে আসারও ঘোষণা দিয়েছে অত্যন্ত রক্ষণশীল সংগঠনটি। তালেবানের প্রথম দফার শাসনামলে নারীশিক্ষা ও নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও, এবার সেসব বিধিনিষেধ আর না রাখার সিদ্ধান্তই নিয়েছে তারা।

এসব কারণেই তালেবানের সরকার গঠন বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে টোলো নিউজ জানিয়েছে তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা বারাদার আফগানিস্তানের নতুন সরকারের নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন। আর মন্ত্রিসভায় ৮০ ভাগ আসনেই থাকবেন তালেবানের দোহা টিমের সদস্যরা।

মন্ত্রিসভায় বারাদারের সাথে তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব এবং শের মোহাম্মদ আব্বাস স্ট্যানিকজাইও থাকবেন বলে জানা গেছে। আর সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই বা প্রভাবশালী আফগান নেতা আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ তালেবানের আসন্ন মন্ত্রিসভায় স্থান না পেলেও, তালেবান তাদেরকে সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply