ফেনী প্রতিনিধি:
ফেনীর ফুলগাজীতে খালেদা ইসলাম অমি (২৫) নামে এক গৃহবধূকে ঘরের জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসিডে গৃহবধূর মুখমণ্ডল, গলা ও হাতের কিছু অংশ ঝলসে গেছে।
রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের পূর্বদরবারপুর সেকান্দর মৌলভী বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। তাকে প্রথমে ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা প্লাস্টিক সার্জারি ও বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, অসুস্থ গৃহবধূ‚ খালেদা ইসলাম অমিকে বাড়িতে ঘরের মধ্যে রেখে আজ রোববার সকালে তার মা শাহেন আরা বেগম, বোন শারমিন আক্তারসহ স্বজনরা ফেনী শহরের ট্রাংক রোডে ‘সচেতন নাগরিক সমাজে’র আয়োজনে নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষণ প্রতিরোধে মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে তারা খবর পান বাড়িতে অসুস্থ খালেদা আক্তার অমিকে কে বা কারা জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ করেছে। এসিডে অমির মুখ, গলা ও হাত ঝলসে গেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
পরে গৃহবধূ‚ অমি তাদের জানিয়েছে- অমির স্বামী পক্ষের দুইজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি তাদের চিনতে পেরেছেন। তাকে দ্রুত ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. তৌহিদুল ইসলাম জানান, এসিডে ওই গৃহবধূর মুখমণ্ডল, গলা ও হাতের কিছু অংশ ঝলসে গেছে। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের শেখ হাসিনা প্লাস্টিক সার্জারি ও বার্ন ইউনিটে রেফার করা হয়েছে।
খবর পেয়ে ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেষ্টিগেশনের (পিবিআই) এসপি মো. আসাদুজ্জমানসহ ফেনীর পুলিশ কর্মকর্তাগণ তাকে দেখতে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ছুটে যান এবং খোঁজ খবর নেন।
এদিকে দুপুরেই র্যাব ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে এঘটনার জড়িত অভিযোগে মো. তারেক মজুমদার (২৫) ও আবদুলাহ আল মিনার (১৯) নামে দুইজনকে আটক করেছে।
ফুলগাজী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবু তাহের এসিড নিক্ষেপের ঘটনার দুইজনকে গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আটক মো. তারেক র্যাব হেফাজতে ও আবদুল্লাহ মিনার ফুলগাজী থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ৫ বছর আগে ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুরের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে খালেদা ইসলাম অমির সাথে পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়া গ্রামের প্রবাসী লিখন আহমেদের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে লিখনের মা ও ভাই-বোনরা মিলে খালেদাকে যৌতুকের জন্য নানা নির্যাতন করতে থাকে। গত ৭ আগস্ট চিকিৎসার নামে সাপ দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালায় গৃহবধূ অমির ওপর।
এ ঘটনায় অমির পরিবারের পক্ষ থেকে ফুলগাজী থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ গৃহবধূ অমির ননদ হাসিনা আক্তার ও ননদের স্বামী আবুল কাশেমকে গ্রেফতার করে। অমির বাবা ইসমাইল হোসেন ও ভাই সাগর কাতার প্রবাসি। তিন বোনের মধ্য দ্বিতীয় অমির নুরীয়া নামে চার বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
Leave a reply