বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে আসায়, আবারও আলোচনায় কমিশনার নিয়োগের প্রক্রিয়া। নতুন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটিতে ভরসা পাচ্ছেন না নির্বাচন বিশ্লেষকেরা। গেলো দু’বার সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হলেও যোগ্য কমিশন গঠিত হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংবিধান অনুযায়ী সবার আগে আইন প্রণয়ন জরুরি। যেখানে নিয়োগ পদ্ধতি ও যোগ্যতা নির্ধারিত থাকবে।
ভোটের লড়াইয়ে মূল রেফারি নির্বাচন কমিশন। তবে অভিযোগ আছে, ক’বছর ধরে কেবল লড়াইয়ের আয়োজকের ভূমিকায় তারা। ফাউল বা আইন ভাঙ্গায় ভূমিকা ছিল নীরব। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের আগে তাই আবারও আলোচনায় নির্বাচন প্রসঙ্গ।
নির্বাচন বিশ্লেষক ড. তোফায়েল আহমেদ বলছেন, ভোটার এখন ভোটকেন্দ্র বিমুখ হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। বেশ কয়েকটি নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ দেখা যায়নি। এতে ক্ষমতাসীন দল থেকে যারা মনোনয়ন পাচ্ছে তাদের নির্বাচিত হওয়া একদম নিশ্চিত।
শোনা যাচ্ছে, আবারও সার্চ কমিটির মাধ্যমে হবে কমিশনার বাছাই। তবে তাতে আস্থা রাখতে পারছেন না বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, দলীয় মতাদর্শের বাইরে যেতে পারেনি কোনো কমিটি।
সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক বলেন, সার্চ কমিটি গঠন হচ্ছে সরকারের ইচ্ছায়। সেই কমিটি পাঁচ জন বা দশ জন যাদেরকেই তারা সার্চ করে দেয় তাদের মধ্য থেকেই সরকার কাউকে কমিশনার হিসবে নিয়োগ দিচ্ছে। পুরো বিষয়টি সরকার কর্তৃক গঠিত নির্বাচন কমিশন হয়ে যাচ্ছে।
সংবিধানের ১১৮ এর ১ ধারায় বলা আছে, আইন সাপেক্ষে অনধিক পাঁচ সদস্য নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। তবে সে আইন হয়নি এতো বছরেও। আইনজ্ঞদের অভিযোগ, নিজেদের কর্তৃত্ব বহাল রাখতেই উদ্যোগ নিচ্ছে না সরকার।
এবিষয়ে ড. শাহদীন মালিক বলেন, আইন না থাকলে সার্চ কমিটি গঠন করার কোনো ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির নেই। প্রধানমন্ত্রী সরকারের উপদেষ্টা উনি কিছু করতে পারেন না। তাই সরকারই রাষ্ট্রপতিকে সার্চ কমিটিতে কারা থাকবে তাদের নাম দিচ্ছে।
নির্বাচন কমিশন আইন না থাকার জটিলতা থাকছে কমিশন গঠনের পরেও। বিভিন্ন সময়ে সিইসি’র একক আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অন্যান্য কমিশনাররা।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়ে আইন থাকতে হবে, যেখানে তাদের নিয়োগ, ইম্পিচ করা, অযোগ্য প্রমাণিত হলে অপসারণ করা এসব সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।
উল্লেখ্য, বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আসছে ১৫ ফেব্রুয়ারি। এর আগেই সিইসিসহ কমিশনার নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি।
Leave a reply