ফু ওয়াং বার’র ৪১ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন

|

ছবি: প্রতীকী

গুলশানের ফু ওয়াং বারের বিরুদ্ধে ৪১.০৮ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর। ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের উপ-পরিচালক ফেরদৌসী মাহবুবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল এই তদন্ত সম্পন্ন করেন।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর ফু ওয়াং বোলিং অ্যান্ড সার্ভিসেস লি. এর ব্যবসায়িক কার্যক্রম তদন্ত করে প্রায় ৪১.০৮ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি উদঘাটন করেছে। ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বারের মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং অপরাধ অনুসন্ধান করার জন্য শুল্ক গোয়েন্দাকে চিঠি দিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা।

প্রতিষ্ঠানটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর থেকে লাইসেন্স নিয়ে বারে মদ ও মদ জাতীয় দ্রব্য বিক্রয় এবং রেস্টুরেন্টে খাবারের সেবা প্রদান করে।

অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হতে সিএ রিপোর্ট ও সংশ্লিষ্ট ভ্যাট সার্কেল অফিস থেকে মূসক সংক্রান্ত দলিলাদি সংগ্রহ করা হয়। উক্ত দলিলাদি আড়াআড়ি যাচাই করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ফু ওয়াং বার বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকির সাথে জড়িত হয়েছে। অনুসন্ধানে ধারণা করা হচ্ছে বারে ব্যবহারকৃত মদজাতীয় পণ্য সংগ্রহ ও বিক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে। এ বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধান করার জন্য এনবিআরের শুল্ক গোয়েন্দাকে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে উদঘাটিত মূসকের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানকে বক্তব্য প্রদানের জন্য কয়েক দফায় সময় দেয়া হলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য রাখেনি। প্রতিষ্ঠানটিতে একাধিকবার এ সংক্রান্ত নোটিশ ইস্যু করলেও চাহিদা মোতাবেক দলিলাদি দাখিল থেকে বিরত ছিল। নিজের প্রতিশ্রুত সময়সীমা নিজেই ভঙ্গ করে এবং শুধুমাত্র সময় প্রার্থনা করে তদন্তে কালক্ষেপণ করে।

এছাড়া তদন্ত দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি উৎসে কর্তন খাতে কোনো ভ্যাট পরিশোধ করেনি। উক্ত সময়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রদেয় ভ্যাটের পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার ২৩১ টাকা। পূর্বে কোনো ভ্যাট পরিশোধ না করায় প্রতিষ্ঠানটির নিকট হতে অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ ২ কোটি ৩৮ লাখ ৩৩ হাজার ২৩১ টাকা আদায়যোগ্য। উৎসে কর্তন বাবদ এই ফাঁকির ওপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২% হারে সুদ টাকা প্রযোজ্য।

অপরদিকে, স্থান-স্থাপনা ভাড়ার বিপরীতে অপরিশোধিত মূসকের পরিমাণ ৪৩ লাখ ১১ হাজার ৫৮ টাকা উৎঘাটন করা হয়। অফিস, স্থান-স্থাপনা ভাড়ার বিপরীতে এই ফাঁকির ওপর ভ্যাট আইন অনুসারে মাস ভিত্তিক ২% হারে সুদ প্রযোজ্য।

তদন্তে উদঘাটিত পরিহারকৃত ভ্যাট আদায়ের আইনানুগ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে মামলাটি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা উত্তরে প্রেরণ করা হবে। একইসাথে প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আরও মনিটরিং করার জন্যও সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

একইসাথে মাদকদ্রব্যের কোনো অপব্যবহার এবং এ সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরকে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে, এ সংক্রান্ত আয়কর নথিতে কোনো অপরাধ হয়ে থাকলে তাও অনুসন্ধান করার জন্য এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলকে (সিআইসি) অনুরোধ করা হয়েছে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply