শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যবসায় বিনিয়োগের লোভ দেখিয়ে গ্রাহকের হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে আলোচিত এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে। মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তারা গড়ে তুলেছে সম্পদের পাহাড়। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও চলছে অন্তত ১৫টি। অবশেষে টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এহসান গ্রুপের মালিক রাগিব আহসান ও তার প্রধান সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
শরীয়াহ আইনে ভালো মুনাফার লোভ দেখিয়ে পিরোজপুর ও বরিশাল অঞ্চলে রাগীব আহসান গড়ে তোলেন এহসান গ্রুপ। ওয়াজ মাহফিলের মাধ্যমেও চলতো তাদের প্রচারণা। ২০০৮ সালে, ১০ হাজার গ্রাহক নিয়ে এহসান গ্রুপের পথচলা শুরু হয়। প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয়া হয়েছিল কমপক্ষে ১ লাখ টাকা।
শুরুতে কয়েকজনকে কিছু মুনাফা দিলেও বেশ কয়েকবছর ধরে অনেকটাই যেন বাতাসে মিলিয়ে যায় এহসান গ্রুপ। এদিকে কাঙ্ক্ষিত লাভের টাকা ফেরত না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। দীর্ঘদিন সভা-সমাবেশ-মানববন্ধনের পাশাপাশি কজন বিনিয়োগকারী দায়ের করেছেন বেশ কয়েকটি মামলাও। দুই বছর আগে একবার ধরাও পরেছিলেন রাগিব, তবে তারপর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি।
সেসব অভিযোগ আমলে নিয়েই এহসান গ্রুপের রাগীব ও তার সহযোগী আবুল বাশারকে আটক করে র্যাব। সংস্থাটি বলছে, ধর্মীয় অনুভূতি কাজে লাগিয়ে হাজার হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে এহসান মাল্টিমিডিয়া নামে ১৭ টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে রাগীব। যার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় বিপুল পরিমাণ অর্থ।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম সেলের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহার করে তিনি এই এমএলএম ব্যবসার ফাঁদ তৈরি করেন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতির অপব্যবহার করে সবাইকে বোঝান যে শরীয়াহ সম্মত সুদবিহীন বিনিয়োগের জন্য উনি সবাইকে আকৃষ্ট করেন। এসব অর্থ দিয়ে রতাগিব তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে জমিজমা কিনেছে, দুইটি বড় বড় মার্কেটও নির্মাণ করেছে সে।
র্যাবের দাবি, এখন এ গ্রুপের বিনিয়োগকারীর সংখ্যা অন্তত ৫৫ হাজার। তাদের কাছ থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পেয়েছে র্যাব।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে গ্রাহকদের থেকে ১১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা স্বীকার করে প্রাথমিকভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন রাগীব হাসান।
দুইবছর আগে একবার প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার হন রাগীব হাসান, তারপর থেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি।
/এসএইচ
Leave a reply