মহাকাশ পর্যটনে নতুন দিগন্ত সূচিত হচ্ছে কাল। এদিন, মহাশূন্যে যাত্রা করবে প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক ফ্লাইট। স্পেসএক্সের ‘ইন্সপিরেশন ফোর’ নামের এই মিশনে মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ পাচ্ছেন ৪ সাধারণ যাত্রী। তবে যাত্রার আগে শখের নভোচারীদের নিতে হয়েছে নানা প্রশিক্ষণ।
মহাকাশে ভরশূন্য অবস্থায় কীভাবে খাওয়াদাওয়া করেন নভোচারীরা? কোথায় ঘুমান? তারা কি চুলের যত্ন নেন? ভেসে ভেসে কীভাবে করেন নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজকর্ম? মহাশূন্যের জীবনযাপন নিয়ে এমন নানা কৌতুহল মানুষের মধ্যে।
নাসার এই বিজ্ঞানীদের ভিডিও থেকে পাওয়া যেতে পারে কিছুটা ধারণা। মহাশূন্যে প্রতিদিনকার কাজের কিছু ভিডিও প্রকাশ করেছেন তারা। যেখানে পরামর্শ মিলবে ছোটখাটো দৈনন্দিন কাজগুলো নিয়েও।
নাসার মহাকাশচারী মেগান ম্যাকারথার বলেন, তরল দ্রব্যের ক্ষেত্রে একটু বেশিই সতর্ক থাকতে হয়। দ্রুত খেতে গিয়ে কিছুটা পড়ে গেলে তা যেকোনো জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে। পৃথিবীতে যেসব কাজ খুব সহজে করা যায়, মহাশূন্যে সেগুলোর ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্ক থাকতে হয়। স্বাভাবিক কাজগুলোই চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় লাগে।
মহাকাশ অভিযান এখন আর কেবল বিজ্ঞানীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং মহাশূন্য পর্যটন নিয়ে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বিশ্বের সেরা ধনীদের মধ্যে। গত জুলাইয়ে নিজ প্রতিষ্ঠান ভার্জিন গ্যালাকটিকের নভোযানে চেপে মহাশূন্য সফরে যান ধনকুবের রিচার্ড ব্র্যানসন। সফরসঙ্গী ছিলেন ৫ যাত্রী। ৯ দিন পর ব্লু অরিজিনের নিউ শেফার্ডে চেপে মহাকাশে ঘুরে আসেন শীর্ষ ধনী জেফ বেজোস। ভাই মার্ক বেজোসসহ সাথে ছিলেন আরও দুজন।
তবে এবারই প্রথম যাত্রা করছে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক ফ্লাইট। চার যাত্রী নিয়ে তিনদিনের মিশনে যাচ্ছে মার্কিন ধনকুবের এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্সের নভোযান। বড় অংকের অর্থের বিনিময়ে মহাশূন্য সফরের সুযোগ পেয়েছেন জ্যারেড ইসাকম্যান,সিয়ান প্রক্টর, হেইলি আর্কেন্যু আর ক্রিস সেমব্রসকি। তবে যাত্রার আগে শখের নভোচারীদের নিতে হয়েছে নানা প্রশিক্ষণ। তাদের উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দিলেন নাসার নভোচারীরা।
নাসার মহাকাশচারী মার্ক ভান্দে হেই জানালেন, শুরুর দিকে আমার রোলার কোস্টারে চড়ার মতো অভিজ্ঞতা হয়েছিল। মনে হতো হঠাৎ নিচের দিকে পড়ে যাচ্ছি। পরে অভ্যস্ত হয়ে যাই। আগে পৃথিবীকেও খুব মিস করতাম। এখন তো টানা কয়েক মাস ধরেই থাকি। তবে, আমার মনে হয় যারা টাকা খরচ করে আসছে, দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হবে তাদের।
জুলাইয়েই মহাকাশ ভ্রমণের লক্ষ্যে ৬ লাখ বুকিং পেয়েছে ব্র্যানসনের ভার্জিন গ্যালাকটিক। টিকেট বিক্রি হয়েছে আড়াই লাখ ডলার করে। ২০২২ এর মধ্যে পুরোদমে স্পেস ট্যুরিজম শুরু করতে চায় তারা।
Leave a reply