নিজস্ব প্রতিবেদক:
অন্যের হয়ে জেল খাটা মিনু আক্তারের দুই সন্তান ইয়াসিন (১২) ও গোলাপের (৯) ভরণপোষণ ও পড়ালেখার দায়িত্ব নিলো দেশের অন্যতম ইস্পাত নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত অনাথ দুই সন্তানের দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এমন তথ্য পাওয়া গেছে জেলা প্রশাসন সূত্রে।
কেএসআরএমের মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, কোম্পানির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাতের আগ্রহের কথা ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। মূলত জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী কেএসআরএম করণীয় নির্ধারণ করবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, মিনু আক্তারের অনাথ দুই সন্তানের সার্বিক দায়িত্ব নিতে চায় শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম। ইতোমধ্যে কেএসআরএমের পক্ষ থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে একাধিকবার। কেএসআরএমকে আমরা কিছু করণীয় নির্ধারণ করে দেবো। সে অনুযায়ী সন্তান দুটির ভরণপোষণের দায়িত্ব নেবে শিল্প প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সার্বক্ষণিক খবরাখবর রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, স্বামী পরিত্যক্ত হতভাগ্য মিনু আক্তার তার তিন সন্তানের ভরণপোষণের আশ্বাসে অন্যের হয়ে কারাগারে যায়। অল্পকিছুদিনের মধ্যে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু তিনবছরেও মুক্তি না মিললে ও বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় কিছু আইনজীবীর প্রচেষ্টায় ১৬ জুন মুক্তি পান।
কারামুক্তির ১৩ দিনের মাথায় রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন মিনু। পরে ২৯ জুন ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। প্রথমে অজ্ঞাত লাশ হিসেবে ধরা হলেও পরে তাকে মিনু বলে চিহ্নিত করে পুলিশ ও মিনুর পরিবার। তার বড় ছেলে অর্থাভাবে ষোলশহর চায়ের দোকানে চাকরি নিলেও তার (মিনু) মৃত্যুর পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় সে। গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ হলে পুলিশি তৎপরতায় তাকে খুঁজে পাওয়া যায় নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিশু কিশোর সংশোধনাগারে। অভাব-অনটনে মেজ মেয়ে মারা যায় আর ছোট ছেলে আছেন দিনমজুর মামার আশ্রয়ে।
Leave a reply