কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে আফগান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। সন্তান জন্মদানে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন আফগান নারীরা। রাবিয়া নামের এক আফগান নারী বিবিসিকে জানিয়েছেন কী ভয়ঙ্কর দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হয়েছে সন্তান জন্মদানের সময়ে।
তিনি জানান, মেটারনিটি সেকশনে এখন নেই সন্তান জন্মদানের ন্যূনতম সুবিধা। ইলেক্ট্রিসিটি নেই, নেই আলো কিংবা বাতাস, শুধু তাই নয়, ব্যথা নিবারক কোনো দ্রব্য এবং ওষুধ- কিছুই নেই এখন হাসপাতালে। কোনো খাবারের ব্যবস্থাও করা যায়নি তার জন্য।
রাবিয়ার ধাত্রী আবিদা বলেন, আমরা এমনভাবে ঘামছিলাম যেন গোসল করছি। এই পেশায় যতদিন কাজ করছি, তার মধ্যে এই অভিজ্ঞতাই ছিল সবচেয়ে খারাপ। প্রচণ্ড কষ্ট হয়েছে আমাদের। কিন্তু তালেবান ক্ষমতায় আসার পর প্রতিটি দিন ও রাতের বাস্তবতাই এখন এরকম।
জানা যায়, অন্ধকারের মধ্যেই মোবাইল ফোনের আলোয় অক্লান্ত পরিশ্রম করে শিশুর জন্মের সময় কাজ করে গেছেন আবিদা। তার মাতৃসদনে নেই অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস।
আবিদা বলেন, কয়েক রাত আগে এক গর্ভবতী নারীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। তিনি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর জন্য অনুরোধ করলেও আমরা তা করতে পারিনি। আমরা তাকে বলেছি ট্যাক্সি নিয়ে চলে আসতে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি ট্যাক্সিও পাননি, কারণ রাস্তায় এখন ট্যাক্সিও পাওয়া যায় না। আর আমাদের নেই অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানী কেনার মতো অর্থ।
গর্ভবতী মায়েদের সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে মা ও শিশু উভয়ই বেঁচে আছেন, এমন ঘটনা এখন আফগানিস্তানে বিরল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণায় উঠে এসেছে, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহারের ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের চিত্র অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রতি এক লাখ গর্ভবতী মায়ের মধ্যে সন্তান প্রসবকালে মারা যাচ্ছেন ৬৩৮ জন।
ইউএনএফপিএ’র নির্বাহী পরিচালক নাটালিয়া কানেম বলেন, আফগানিস্তানের বর্তমান চিত্রটি অত্যন্ত ভয়াবহ এবং জরুরি উদ্যোগ ছাড়া সেখানকার মা ও শিশুদের জীবন বাঁচানোর অন্য কোনো উপায় নেই।
/এম ই
Leave a reply