চীন ও যুক্তরাষ্ট্র, এই দুই দেশের ভূ-রাজনৈতিক ও সামরিক কৌশলগত প্রতিযোগিতা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। দেশ দুটির মুধ্যে ভেঙে পড়া সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে তাদের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন সামনে রেখে বার্তা সংস্থা এপির মুখোমুখি হয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। সেখানে তিনি কথা বলেন বিশ্ব রাজনীতি থেকে মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে। এছাড়াও সাক্ষাৎকারে তিনি আলোচনা করেছেন, জলবায়ু সংকট, করোনা মহামারি আর তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগানিস্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়েও।
সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘ মহাসচিব অকপটেই বললেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের শীতলতায় স্নায়ুযুদ্ধের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দুই পরাশক্তির মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ বেধে গেলে বিশ্বের জন্য সামাল দেয়া কঠিন হবে। উদ্বেগ নিয়ে গুতেরেস বলেন, দুই দেশের বিরোধের জেরে বিভক্ত হয়ে পড়বে গোটা বিশ্বই।
তিনি বলেন, চীন আর যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে এখন অকার্যকরই বলা যায়। বাণিজ্য-প্রযুক্তির মতো ইস্যুগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা প্রয়োজন। নয়তো দুই অর্থনীতির পক্ষে-বিপক্ষে বিভক্ত হয়ে যাবে বিশ্ব। এতে করে দুই দেশের সামরিক আর ভূরাজনৈতিক কৌশল আরও বিপজ্জনক হতে পারে। তাই যেকোনো মূল্যে এই স্নায়ুযুদ্ধ ঠেকাতে হবে।
মহামারি আর জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় ব্যর্থতার জন্য শীর্ষ ধনী দেশগুলোকে দায়ী করেন গুতেরেস। সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে না পারার দায় দেন বড় অর্থনৈতিক শক্তিগুলোকে। তাগিদ দেন সমন্বিত পদক্ষেপের। এছাড়া তালেবানের নেতৃত্বে আফগানিস্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
আফগান ইস্যুতে ভূমিকা কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, জাতিসংঘ সম্পৃক্ত হলেই রাতারাতি কোনো পরিবর্তন চলে আসবে না। কোনো কোনো দেশের হাজার হাজার সেনা ছিল আফগানিস্তানে। তারা সেখানে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার খরচও করেছে। এরপরও সমাধান হয়নি। এখন জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় হঠাৎই একটি অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন হয়ে যাবে না। জাতিসংঘের ক্ষমতা সীমিত। আমাদের মূল দায়িত্ব আফগান জনগণকে মানবিক সহায়তা দেয়া।
সাক্ষাৎকারে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন সাবমেরিন দিতে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের চুক্তি আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলবে বলেও মন্তব্য করেন গুতেরেস।
Leave a reply