রাজবাড়ী প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর পাংশায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী কে কুপিয়ে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলো গৃহবধু ঝর্ণা বেগম (৪০) ও স্বামী দেলবর আলী (৫০)। রবিবার (১১মার্চ) সকালে পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের মেঘনা খামার পাড়া গ্রাম থেকে পুলিশ তাদের মরদেহ দুইটি উদ্ধার করে।
দেলবরের প্রতিবেশী ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, দেলবর ও ঝর্ণা বেগমের পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলেরা কেউ বাড়িতে থাকে না। ১১ বছর বয়সী মেয়ে থাকে পাশের বাড়িতে। ঝর্ণা ওমান প্রবাসী ছিলেন। তিনমাস আগে তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। এর কয়েকদিন পর তিনি বরিশালে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে রান্নার কাজ নেন। ঝর্ণার এ কাজে রাজী ছিলেন না দেলবর। দেলবরের সন্দেহ ছিল ওই ব্যক্তির সঙ্গে ঝর্ণার পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে। কয়েকদিন আগে ঝর্ণা বাড়িতে এলে দেলবর তাকে বরিশালে যেতে নিষেধ করেন। কিন্তু ঝর্ণা তার কথা না শুনে বরিশাল যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পাঁচ-ছয়দিন ধরে কথা কাটাকাটি চলছিল। রোববার সকাল ৮টার দিকে তাদের মেয়ে রাবেয়া ঘুম থেকে উঠে পাশের বাড়ি থেকে নিজেদের বাড়িতে এসে দেখেন ঘরের দরজা বন্ধ। এসময় সে তার বাবা-মাকে ডাকাডাকি করলে ঘরের দরজা না খোলায় সে জানালা দিয়ে উঁকি দেয়। এসময় সে তার বাবা মায়ের মরদেহ দেখে চিৎকার দেয়। চিৎকার শুনে আমরা এসে দেখি ঝর্ণার রক্তাক্ত মরদেহ পরে আছে। তার ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের তিনটি কোপের চিহ্ন রয়েছে।
এদিকে দেলবরের মরদেহ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলতে দেখা যায়। এ দৃশ্য দেখে তাৎক্ষণিক পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
পাংশা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোফাজ্জেল হোসেন জানান, স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। ঘটনার কারণ উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত করছে।
সহকারী পুলিশ সুপার পাংশা সার্কেল মোঃ ফজলুল করিম জানান, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্টে দেখা গেছে মহিলার মাথায় ধারালো অস্ত্রের ক্ষত রয়েছে।
Leave a reply