সম্প্রতি চাঁদে জমি কেনা নিয়ে অন্যান্য দেশের মতো হিড়িক পড়েছে বাংলাদেশেও। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) খুলনা জেলার এমডি অসীম নামের এক ব্যক্তি তার ষষ্ঠ বিবাহবার্ষিকীতে স্ত্রী ইসরাত টুম্পাকে চাঁদে জমি কিনে দিয়েছেন। এ নিয়ে একটি খবর রীতিমতো ভাইরাল নেট মাধ্যমে। এর আগেও সাতক্ষীরা জেলার দুই তরুণ চাঁদে জমি কিনে উঠে আসেন খবরের শিরোনামে।
ভাবছেন এবার আপনিও চাঁদের এক টুকরো জমি করে নেবেন নিজের নামে? এর জন্য প্রথমেই আপনাকে ডেনিস হোপের ওয়েবসাইট লুনার অ্যাম্বাসি ডট কমে যেতে হবে। শুধু চাঁদ নয়, পৃথিবী এবং সূর্য বাদে মঙ্গল, বৃহস্পতিসহ আমাদের সৌরমণ্ডলের অন্য যে কোনও গ্রহের জমি কিনতে পারবেন এই ওয়েবসাইট থেকে।
এর জন্য আগে আপনাকে ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এরপর অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়া শেষে আপনাকে চাঁদের যে অংশটি আপনি কিনলেন তার একটি স্যাটেরাইট ম্যাপ এবং জমি কেনার আইনি কাগজপত্র দেয়া হবে মেইলের মাধ্যমে।
এ ক্ষেত্রে আপনি কতটুকু জমি কিনছেন তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিটি গ্রহের জন্য দাম পড়বে ২৪.৯৯-৪৯৯.৮০ মার্কিন ডলার। শুধু তাই নয়, চাঁদে প্রথম মানব অভিযান অ্যাপোলো ১১ যেখানে ল্যান্ড করেছিল সে স্থানটি কেনারও সুযোগ করে দিয়েছে এই ওয়েবসাইট। যদিও সেই স্থান বর্তমানে বিক্রিত।
এখন অনেকগুলো প্রশ্ন নিশ্চই আপনার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রথমত, সৌরজগতের সব গ্রহের জমির দাবিদার কে এই ডেনিস হোপ? এবং আদৌ চাঁদ বা অন্য কোনো গ্রহে এভাবে জমি কেনা সম্ভব কি না।
মূলত ডেনিস হোপ হলেন একজন মার্কিন নাগরিক। ১৯৮০ সাল থেকেই তিনি দাবি করে আসছেন, আইনিভাবে সৌরমণ্ডলের সব গ্রহের মালিক তিনি। এর জন্য বিভিন্ন আইনি নথিও দেখান তিনি।
চাঁদের কে মালিক বা এর জমির অধিকার নিয়ে সেই ১৯৬৭ সাল থেকেই বিভিন্ন চুক্তি ও আইন-কানুন বানানোর চেষ্টা চলে এসেছে। যেহেতু চাঁদ পৃথিবীর উপগ্রহ এবং তা খনিজ সম্পদে ভরপুর, তাই এর অধিকার নিয়ে মানবজাতির মাথাব্যাথার কারণও আছে প্রচুর।
তবে জাতিসংঘের ‘আউটার স্পেস ট্রিটি’ চুক্তি অনুযায়ী, চাঁদে কেউ জমি কিনতে পারে না। তবে কিছু দেশের নাগরিক আইন বা চুক্তির ফাঁকফোকর বের করে চাঁদ এবং অন্যান্য গ্রহ–উপগ্রহে জমি বিক্রির নাম করে পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। যারা কিনছেন, তারা আসলে প্যাকেটভর্তি বাতাসই কিনছেন!
এখন ভেবে দেখুন, চাঁদে জমি কিনবেন কি না!
Leave a reply