জাতিসংঘে বাংলা ভাষণে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

|

রোহিঙ্গা সঙ্কটের সৃষ্টি মিয়ানমারে, সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারের হাতে। জাতিসংঘের ৭৬ তম অধিবেশনে বাংলায় দেয়া ভাষণে এমন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভাষণে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই গঠনমূলক উদ্যোগ নিতে হবে।

শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের ৭৬ তম অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে করোনা মোকাবেলা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বৈশ্বিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ৬ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ১৭ বারের মতো অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বরাবরের মতো এবারও বাংলায় ভাষণ দেন তিনি। অধিবেশনে দেয়া বক্তৃতায় বাংলাদেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অর্থনীতি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়নের মত মৌলিক ইস্যুতে বহুদূর এগিয়েছে দেশ। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আঞ্চলিক প্রতিবেশী দেশগুলোর চাইতে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ উদ্যোগ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, শিক্ষা, দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস, নারীর ক্ষমতায়নসহ অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছে। আমরা ব্যাপকভাবে ‘সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী’ কর্মসূচির সম্প্রসারণ করেছি। ‘টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন ২০২১’ অনুযায়ী ২০১৫ সাল থেকে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রার সূচকে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে আছে।

আলোচনায় গুরুত্ব পায় রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ। এ সংকটের সমাধান বিশ্ব সম্প্রদায় চার বছরেও করতে না পারায় হতাশা জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মিয়ানমারকে অবশ্যই তার নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগেও বলেছি, আবারও বলছি, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সৃষ্টি মিয়ানমারে, সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে। রাখাইন রাজ্যে তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই কেবল এ সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে। এজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

করোনা মোকাবেলাসহ বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে ৬ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জরুরিভিত্তিতে টিকা বৈষম্য দূর করতে হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষকে টিকা থেকে দূরে রেখে কখনোই টেকসই পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। তাই আমি আবারও আহ্বান জানাচ্ছি, সবার জন্য ন্যায়সঙ্গত ও সাশ্রয়ী মূল্যে টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

অধিবেশনে, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধনী অথবা দরিদ্র, কোনো দেশই এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে নিরাপদ নয়। তাই আমি ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, নিঃসরণের জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং টেকসই অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন ও প্রযুক্তির অবাধ হস্তান্তরের আহ্বান জানাচ্ছি।

বক্তৃতায় সারা বিশ্বে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে মিলেমিশে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply