চা বোর্ড, হাওর উন্নয়ন বোর্ড, বন বিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর আর সেচ ভবন, সব অফিস ঢাকায়। সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদর দফতর, পানি ভবনও চালু হয়েছে ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা পান্থপথে। তবে এসব উদ্যোগকে আত্মঘাতী উল্লেখ করে বিকেন্দ্রীকরণের পরামর্শ পরিকল্পনাবিদদের। এসব স্থাপনার পক্ষে নানা যুক্তি দেখালেও মন্ত্রীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন সত্ত্বেও নানা কারণে বাস্তবায়িত হচ্ছে না বিকেন্দ্রীকরণ ভাবনা।
মতিঝিল, ঢাকার ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা। এখানে অবস্থিত চা বোর্ডের প্রধান কার্যালয়, যদিও ঢাকা তো দূরের কথা, আশপাশের কোনো জেলায় হয় না চায়ের আবাদ। আবার সারাদেশের বনজঙ্গল দেখভাল করে যে বনবিভাগ, তার সদর দফতর আগারগাঁওয়ে। অথচ এটা হওয়ার কথা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন সংলগ্ন কোনো জেলায়।
আবার সংসদ ভবন এলাকার এই সেচ ভবন ঢাকায় কতটা জরুরি, সেই প্রশ্ন আছে অনেকের। ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেটের একটা বড় অংশজুড়ে অবস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর; সুনামগঞ্জ বা নেত্রকোণা নয়, পান্থপথ মোড়ে দাঁড়িয়ে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন বোর্ড।
সরকারি সব সংস্থার প্রধান কার্যালয় ঢাকাতে হবে, এমন প্রবণতা রয়েছে অব্যাহত এখনও। পান্থপথ মোড়ে সম্প্রতি তৈরি হওয়া বিশালাকার পানি ভবন তার বড় উদাহরণ। নীতিনির্ধারকরাও অসহায়, বলছেন বিকেন্দ্রীকরণ সরকার প্রধানের অগ্রাধিকার হলেও তা নানা কারণে বাস্তবায়িত হয়নি বলে জানালেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বললেন, প্রধানমন্ত্রীও বিকেন্দ্রিকরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
অবশ্য এসব সরকারি দফতর ঢাকায় রাখার পক্ষেও মন্ত্রীদের অনেক যুক্তি রয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রী জানালেন, বিভিন্ন কারণে ঢাকার প্রতি মানুষের টান রয়েছে।
আর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বললেন, ঢাকা থেকে অফিসগুলো সরানোর ব্যাপারে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অফিসগুলোর কার্যক্রম আঞ্চলিক অফিসে স্থানান্তরের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানালেন অর্থমন্ত্রী।
অন্যদিকে জনবহুল এই শহরটি বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় প্রতিবছরই নামছে নিচের দিকে। আর এজন্যই পরিকল্পনাবিদরা মনে করছেন, বিকেন্দ্রিকরণ ছাড়া ঢাকার জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়।
Leave a reply