এক জীবনে এতোটা উত্থান পতন কিংবা দুঃসময় হয়তো খুব কম মানুষের জীবনেই আছে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা সেই কঠিন পথেরই এক যাত্রী। শান্তিময় এক সাধারণ জীবন হঠাৎই বদলে যায় ৭৫ এর এক রাতে। নির্মম সেই বাস্তবতায় শেখ হাসিনার সঙ্গী ছিলো তৃণমূলের লাখো কর্মী। ‘প্রিয় আপা’ চলার পথের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আপন করে নিয়েছেন রাজপথের কর্মীদের।
একদিকে স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষু, অপরদিকে দলে বিভক্তি। তখনও শুকায়নি বঙ্গবন্ধুর রক্তের দাগ। দুঃসহ সেই স্মৃতিকে সঙ্গী করেই পাহাড়সম দায়িত্ব নিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলেন শেখ হাসিনা। ১৯৮১ থেকে শুরু হওয়া নতুন এক সংগ্রামে তৃণমূলের মধ্যমণি হয়ে ওঠেন তিনি। তার পর থেকে এই চল্লিশ বছরে তিনি বাংলাদেশের তৃণমূলের রাজনীতির আদর্শ হয়ে ওঠেন বিভিন্নভাবে। দীর্ঘ এই চল্লিশ বছরে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবন এরশাদের রাষ্ট্রপতিত্বের বিরুদ্ধে আন্দোলন, বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে রাজনীতি, ১৯৯১-এর নির্বাচন, এরপর প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৯৯৬-২০০১, হত্যাচেষ্টার শিকার হওয়া, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে গ্রেফতার, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ মেয়াদে দায়িত্ব পালন ইত্যাদি নানা নাটকীয় ও বৈচিত্র্যময় ঘটনায় পরিপূর্ণ।
লাখো কর্মীকে সাথে নিয়ে তিনি ক্ষমতাসীনদের ভিত নাড়িয়েছেন বারবার। অন্তত ১৯ বার তাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। তবে মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে প্রতিবারই প্রিয় নেত্রীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন দলের কর্মীরা। দিন গড়িয়ে রাত কেটেছে পথে, ছুটে বেরিয়েছেন দেশের এমাথা থেকে ওমাথায়। কখনও পায়ে হেঁটে কখনো ট্রাক কিংবা ট্রেন, সব মিছিলেই ক্লান্তিহীন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
সততা ও পরিশ্রমের ফসল ঘরে তুলতে খুব একটা সময় লাগেনি। প্রজ্ঞা আর আপোষহীনতায় অল্প সময়েই অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির কেন্দ্রে স্থায়ী আসন হয় শেখ হাসিনার।
থেমে থাকেনি ষড়যন্ত্রকারীরাও। ২০০৪ সালে গ্রেনেডে প্রাণনাশের চেষ্টা ছিল শাসকগোষ্ঠীর। কিন্তু লাখো কর্মী যার প্রাণ, সেখানে ভেস্তে যেতে বাধ্য সব অপকৌশল। এক এগারোর সেনা সমর্থিত সরকার যখন কারারুদ্ধ করে শেখ হাসিনাকে আর তখন কর্মীরাই জীবন বাজি রেখে মুক্ত করে আনেন তাদের প্রিয় আপাকে।
রাষ্ট্রীয় ও সরকারি শতব্যস্ততায়ও তৃণমুলের কর্মীদের খোঁজ নেন প্রিয় নেত্রী। উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সব অর্জনের রাজমুকুট তাই কর্মীদের উৎসর্গ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
Leave a reply