আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমা আর অমাবস্যাকে ইলিশের সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। বছর ঘুরে আবারও এসেছে সেই সময়। তাই মা ইলিশ রক্ষায় আজ মধ্যরাত থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ২২ দিন বন্ধ থাকবে ইলিশ শিকার। ফলে জাল গুটিয়ে বাড়ি ফিরেছে উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় আগামী দিনগুলো সংসার চালানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় বরগুনার জেলেরা। এসময়ে সরকারি খাদ্য সহায়তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বরগুনার জেলেরা। যদিও মাছ শিকার বন্ধের এই মৌসুমে জেলে পরিবারগুলোকে ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
এই সময়ে ইলিশ ধরা, পরিবহণ ও কেনাকাটা বন্ধ রাখতে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে। তবে আজ মধ্যরাত পর্যন্ত যারা নদীতে ইলিশ শিকার করবে, মাছগুলো বাজারজাত ও বিক্রিতে যেন তাদের কোনো আইনগত সমস্যা না হয়, সেদিকে নজর দেয়ার দাবিও জানাচ্ছেন জেলেরা।
আজ রোববার (৩ অক্টোবর) থেকে ইলিশ শিকার বন্ধ ঘোষণা করা হলেও ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। মৎস্যজীবি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী মনে করেন, নিষেধাজ্ঞা কিছুদিন পিছিয়ে দিলে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম আরও সফল হতো।
এর আগে ইলিশের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য নদীতে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল সরকার। গত ২৪ জুলাই ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরতে শুরু করেছিল জেলেরা।
সে সময় জেলেরা জানিয়েছিল, এবার মাছ আকার তুলনামূলকভাবে ছোট। তারপরও ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় খুশি তারা। এমনকি ওই সময় তিনশ, পাঁচশ ও সাতশ টাকা কেজি দরে বিভিন্ন আকারের ইলিশ মাছ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ওই সময় নোয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. মোতালেব হোসেন জানিয়েছিলেন, ইলিশ মাছ বড় হতে দেওয়াসহ তাদের প্রজননে সহায়তা করার জন্যই এসব নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এর আগে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে ওই কর্মকর্তা বলেন, এই নিষেধাজ্ঞার প্রধান উদ্দেশ্য ইলিশসহ গভীর সমুদ্রের মাছকে নিরাপদে মা মাছে রূপান্তর করা, যাতে করে তারা নিরাপদে নদীতে ডিম ছাড়তে পারে। গভীর সমুদ্রের মাছগুলোর প্রজননের জন্য এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা কাজে আসে বলেই মনে করেন তিনি।
তবে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও অনেকেই অবৈধভাবে মাছ ধরায় সবসময় এসব নিষেধাজ্ঞার আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না বলেও মনে করেন কেউ কেউ।
Leave a reply