মস্তিষ্কে বিশেষ ধরনের ‘পেসমেকার’ বসিয়ে এক রোগীর গভীর মানসিক অবসাদ দূর করা হলো। বিদ্যুৎশক্তিতে চলে এই পেসমেকার। মস্তিষ্কের যে অংশটির কাজকর্ম অস্বাভাবিক হয়ে পড়ার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে গভীর মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই রোগী, সেই অংশের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পেসমেকার থেকে পাঠানো বিদ্যুৎতরঙ্গই রোগীকে সারিয়ে তুললো। প্রচলিত কোনও চিকিৎসা পদ্ধতিতেই যা সম্ভব হচ্ছিল না। গভীর মানসিক অবসাদগ্রস্ত ওই রোগী আত্মহত্যার চেষ্টা করতেন সব সময়।
সোমবার (৪ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক চিকিৎসা গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার মেডিসিন’ এই ‘পেসমেকার’ সংক্রান্ত পরীক্ষা পদ্ধতি ও সাফল্যের ভিত্তিতে লেখা গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশকে প্রয়োজনে সক্রিয় করে তোলার জন্য বানানো ব্যাটারিচালিত এই পেসমেকারের নাম ‘নিউরোপেস আরএনএস সিস্টেম’।
কুষ্ঠ রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই যন্ত্রটি ব্যবহারে সম্মতি দিয়েছে আমেরিকার ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)’। যা কোনও চিকিৎসাতেই সারানো যায় না সেই রকমের গভীর মানসিক অবসাদ থেকে রোগীকে পুরোপুরি মুক্ত করা যায় কি না তা পরীক্ষা করতে এই নিউরোপেস আরএনএস সিস্টেমকে এবার ব্যবহার করেছিলেন সান ফ্রান্সিসকোর ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
ব্যাটারিচালিত এই যন্ত্রটি যে শুধুই মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশকে প্রয়োজনে সক্রিয় করে তুলতে পারে, তাই নয়। মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের ভেতরে বিদ্যুৎতরঙ্গের পরিমাণ আর তার কমা-বাড়ার উপরেও কড়া নজর রাখতে পারে যন্ত্রটি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদ্ধতি একটি অভিনব উদ্ভাবন। এর ফলে গভীর ভাবে মানসিক অবসাদে দীর্ঘ দিন ধরে ভোগা রোগীকে সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে। যা এতো দিন কোনও চিকিৎসাতেই করা যেত না।
ডর্টস্মাউথের গাইসেল স্কুল অব মেডিসিনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পল হোলঝ্হেমার বলেন, এটি সত্যি সত্যিই অভিনব পদ্ধতি। তবে মাত্র একজন রোগীর উপর পরীক্ষায় সাফল্য এসেছে। আরও বহু রোগীর উপর এই পদ্ধতি পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ভবিষ্যতে তার বহুল ব্যবহারের জন্য।
Leave a reply