পরকাল ও স্বর্গের ধারণা ‘রূপকথার গল্প’ মাত্র! মানুষের মৃত্যুভয় থেকেই এসব ধারণার সৃষ্টি। এমনটাই মনে করতেন জগদ্বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। তার মতে, মানুষের মস্তিষ্কের সবশেষ স্পন্দনের পর আর কোনো বোধ কাজ করে না।
বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের পর এ পৃথিবীর সবচেয়ে প্রভাবশালী ও বিখ্যাত পদার্থবিদ মনে করা হয় স্টিফেন হকিংকে। মাত্র ২১ বছর বয়সে মটর নিউরন রোগে আক্রান্ত এ পদার্থবিদ ‘দ্যা গার্ডিয়ান’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বিগত ৪৯ বছর ধরে আমি অকাল মৃত্যুর সম্ভাবনা নিয়ে বেঁচে আছি। আমি মৃত্যুভয়ে ভীত নই। আবার, মৃত্যুর ব্যাপারে আমার কোনো তাড়াও নেই। আমার আরও অনেক কাজ আছে যেগুলো আমি করতে চাই।
বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে মানুষের মস্তিষ্ককে কম্পিউটারের সাথে তুলনা করে হকিং বলেছেন, যন্ত্রাংশ কাজ না করলে কম্পিউটার অকার্যকর হয়ে যাবে। নষ্ট কম্পিউটারের জন্য স্বর্গ বা পরবর্তী জীবন বলে কিছু নেই। অন্ধকারকে ভয় পায় এমন মানুষের জন্যই পরকালের গল্প।
এর আগে, তার বহুল আলোচিত বই ‘দ্যা গ্র্যান্ড ডিজাইন’-এ হকিং লিখেছেন, মহাবিশ্বের অস্তিত্ব ব্যাখ্যা করতে কোনো ঈশ্বরের প্রয়োজন নেই।
এই বইটির সমালোচনা করেছেন অনেক ধর্মীয় নেতা। তাদের কথা, হকিং যুক্তিতর্ক দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন।
হকিংস মনে করতেন, মহাবিশ্ব একটা বৈজ্ঞানিক নিয়মে চলছে। খুব সহজেই যে এই সমীকরণটি মেলানো যাবে, তাও নয়।
তিনি বলেছেন, শূন্য থেকেই অনেকগুলো মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যে এখানে আছি, এটা সম্ভাব্যতার হিসেব মাত্র। এই কারণে আমাদের উচিত কাজের সর্বোচ্চ অর্থ তৈরি করা।
পরকালে বিশ্বাস না করলেও কর্মতৎপরতায় ঢিল দেননি হকিং। বরং মনে করতেন মানুষের কাজই তাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে মানুষের মাঝে। মৃত্যুর পরে কী? সে প্রশ্নের উত্তরও এতক্ষণে সরেজমিন পেয়ে যাওয়ার কথা এ পদার্থবিদের।
১৯৪২ সালের ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ডে জন্মগ্রহণ করা হকিং বুধবার পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন। বিদায় স্টিফেন হকিং!
যমুনা অনলাইন: টিএফ
Leave a reply