ভালো ক্রিকেটার হতে প্রতিদিন ৬০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি

|

স্বপ্নের পেছনে ছুটছেন ইয়ামিন; প্রতিদিন সাইকেল চালাতে হয় ৪ ঘণ্টা।

প্রতিদিন প্রায় ৬০ কিলোমিটার পথ সাইকেলে পাড়ি দেন ইয়ামিন চৌধুরি। মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকা, প্রায় ৪ ঘন্টার এই কঠোর পরিশ্রমের লক্ষ্য একটাই, ভালো ক্রিকেটার হওয়া। পরিবারে নেই বাবা; অনুশীলন আর নিজের পুষ্টিকর খাবারের খরচ চালান টিউশনি করে। মুশফিকুর রহিমকে ফলো করেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। মায়ের কষ্ট লাঘবে হতে চান বড় মাপের ক্রিকেটার।

ইয়ামিনের দিন শুরু হয় ভোরে মুয়াজ্জিনের আযানের সুরে। নামাজ শেষেই প্রস্তুতি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার। প্রায় ৩০ কিলোমিটারের এই যাত্রা কোনো গাড়িতে নয়, পায়ে চালানো সাইকেলে। গন্তব্য মুন্সিগঞ্জের কুচিয়ামোড়ার আমপাড়া গ্রাম থেকে ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত আবাহনী ক্লাব। দেড় ঘণ্টার এই সাইকেল যাত্রায় মাঝে মাঝে ঘড়ির কাটা মনে করিয়ে দিচ্ছে দ্রুত যেতে হবে, আরও দ্রুত। পেডালে বাড়ে চাপ।

এক সময় পৌঁছে যান নির্দিষ্ট লক্ষ্যে; প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে সাইকেল চালানোর পরও কোনো ক্লান্তি নেই ইয়ামিনের মধ্যে। পৌঁছেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন অনুশীলনে। ব্যাটিং ও উইকেটকিপিং নিয়ে কাজ করে যান পরিশ্রমী ছাত্রের মতো। ইয়ামিনের আদর্শ মুশফিকুর রহিম। ছোট বেলায় যখন এলাকায় ক্রিকেট খেলতেন, তখন থেকেই স্ট্যাম্পের সামনে ও পেছনে দেখিয়েছেন সাবলীল নৈপুণ্য। সবাই তখন থেকেই ইয়ামিনকে ডাকে মুশফিকুর রহিম বলে। মনের অজান্তেই হয়তো লক্ষ্য স্থির করে ফেলেন তরুণ ইয়ামিন, একদিন হবেন মুশফিকুর রহিমের মতো বড় ক্রিকেটার। সেই পথচলায় ইয়ামিনের শক্তি ধৈর্য, পরিশ্রম ও নিবেদন।

বাবা নেই পরিবারে; খাবারের যোগান দেন মা আর একমাত্র মামা। অনুশীলন আর নিজের পুষ্টিকর খাবারের যোগান আসে টিউশনি করে। তবে সেটি যে একেবারেই অপ্রতুল তা স্পষ্ট।

অনুশীলন শেষে ব্যাট-প্যাড তুলে রাখেন ইয়ামিন; এবার বাড়ি ফেরার পালা। ঠিক যেমনিভাবে ৩০ কিলোমিটার এসেছেন, ঠিক তেমনিভাবে যাবেন ৩০ কিলোমিটার। আসার সময় দেড় ঘন্টা লাগলেও যাওয়ার সময় তা বেড়ে দাঁড়ায় আড়াই ঘণ্টায়। ইয়ামিনের অভিভাবক, অ্যাকাডেমির কোচ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের ক্রিকেটও আশা করে থাকবে, ইয়ামিনের চাকা ঘুরতে থাক। সাইকেলের চাকার মতন ইয়ামিনের জীবন চলতে থাক অনেক দূর, যতদূরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply