Site icon Jamuna Television

যশোর বোর্ডের অর্থ কেলেঙ্কারিতে কারা জড়িত?

যশোর শিক্ষাবোর্ডের আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা এখন আলোচনার তুঙ্গে। ব্যাংকের যে শাখা থেকে টাকা লোপাট হয়েছে, তার ম্যানেজারের দাবি, নিখুঁত পরিকল্পনায় সরানো হয়েছে অর্থ। জালিয়াতিতে অভিযুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান মালিকের দাবি, অপকর্মে বোর্ডের কয়েকজন জড়িত।

যশোর শিক্ষাবোর্ডে সোনালী ব্যাংক শাখা থেকেই চেক জালিয়াতি করে তুলে নেয়া হয় আড়াই কোটি টাকা। যশোর শিক্ষাবোর্ড শাখা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার সাইদুর রেজার দাবি, চেকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর, সিরিয়াল নম্বর সবই ঠিকঠাক ছিলো। তাই টাকা দিয়েছেন তারা।

অর্থাৎ পুরো প্রক্রিয়াটি হয়েছে পরিকল্পনা অনুযায়ী এবং নিখুঁতভাবে। আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় ভেনাস প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং এবং শাহী লাল স্টোর নামের দুটি প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ভেনাস প্রিন্টিংয়ের মালিকের দাবি, অপকর্মে জড়িত বোর্ডেরই কয়েকজন।

যশোর শিক্ষাবোর্ডে দুর্নীতি আগেও হয়েছে। দুর্নীতিতে জড়ানোর অভিযোগ আছে বর্তমান চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেনের বিরুদ্ধেও। তাকে এর আগে বরখাস্তের সুপারিশ করা হলেও সে সুপারিশ আলোর মুখ দেখেনি। এমনকি দুদকে তার বিরুদ্ধে মামলাও চলমান। নানা কারণে প্রশ্নবিদ্ধ বোর্ড চেয়ারম্যান মোল্লা আমীর হোসেন বলছেন, তদন্ত কমিটিই সব রহস্য উদঘাটন করবে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমরা তদন্ত করবো, সাধারণ ডায়রি করবো, আইনের আশ্রয় নেবো। আশা করছি, এর সাথে কারা জড়িত তা বেরিয়ে আসবে।

তবে বোর্ডে একের পর এক অনিয়ম আর দুর্নীতির ঘটনায় হতবাক শিক্ষাবিদরা। এমন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেন শিক্ষাবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

প্রসঙ্গত, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড থেকে ৯টি চেকের মাধ্যমে আয়কর ও ভ্যাট বাবদ ১০ হাজার ৩৬ টাকা ইস্যু করা হয়। কিন্তু ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং এবং শাহী লাল স্টোর নামের দুটি প্রতিষ্ঠান এ ৯টি চেক ব্যবহার করে শিক্ষাবোর্ডের অ্যাকাউন্ট থেকে দুই কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০টাকা তুলে নিয়েছে।

২০২০-২১ অর্থবছরের আয়-ব্যয় যাচাইয়ের জন্য ব্যাংক হিসাব মিল করতে গিয়েই বোর্ডের অডিট শাখা এই জালিয়াতির প্রমাণ পায়। সাথে সাথে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অডিট টিমের পক্ষ থেকে যশোর বোর্ডের সচিব বরাবর একটি চিঠি দেয়া হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ অর্থ বছরের আয়-ব্যয় বোর্ডের সকল অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্টের সাথে মিল করতে গিয়ে বড় ধরনের অমিল ধরা পড়ে। ওই দুটি প্রতিষ্ঠান চেকগুলোর বিপরীতে দুই কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন করেছে। এ টাকার বিপরীতে প্রতিষ্ঠান দুটি বোর্ডে কোনো মালামাল সরবরাহ করেছে কিনা, তার কোনো তথ্যও বোর্ড স্টোরে নেই।

২০২০ সালের ৩০ জুলাই থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই ৯টি চেক দিয়ে এসব টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। অডিট রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ ৯টি চেক ছাড়াও আরও জালিয়াতি আছে কিনা তা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

Exit mobile version