নাসিরনগরে মন্দির ভাঙচুর মামলার চার্জশিটভুক্ত ২ আসামি পেলেন আ’লীগের মনোনয়ন

|

ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নাসিরনগরে মন্দির ভাঙচুর মামলার চার্জশিটভুক্ত ২ আসামি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে তাদের মনোনয়ন বাতিল করতে কেন্দ্রে চিঠি পাঠিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগ থেকে ১৩ চেয়ারম্যানপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রাপ্তরা হলেন- গুনিয়াউক ইউনিয়নে জিতু মিয়া, ভলাকুট ইউনিয়নে রুবেল মিয়া, গোকর্ণ ইউনিয়নে ছোয়াব আহমেদ হৃতুল, হরিপুর ইউনিয়নে দেওয়ান আতিকুর রহমান আখি, কুন্ডা ইউনিয়নে মো. ওয়াছ আলী, পূর্বভাগ ইউনিয়নে মো. আক্তার মিয়া, বুড়িশ্বর ইউনিয়নে এটিএম মোজাম্মেল হক সরকার, ধরমন্ডল ইউনিয়নে মো. বাহার উদ্দিন চৌধুরী, চাপড়তলা ইউনিয়নে মনসুর আলী ভূইয়া, চাতলপাড় ইউনিয়নে শেখ আব্দুল আহাদ, ফান্দাউক ইউনিয়নে ফারুকুজ্জামান ফারুক, গোয়ালনগর ইউনিয়নে মো. কিরন মিয়া ও নাসিরনগর ইউনিয়নে মো. আবুল হাশেম।

এদের মধ্যে নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা আ’লীগের সহ-সম্পাদক মো. আবুল হাশেম ও হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান ২০১৬ সালের আলোচিত নাসিরনগরে গৌর মন্দির ভাঙচুর মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি।

২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল দেওয়ান আতিকুর রহমান আখিঁকে। সেসময় দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়ে এই ইউপি চেয়ারম্যানকে নিয়ে বিব্রত হয়েছিল আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় তাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল। যদিও পরে বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে স্বপদে ফিরেছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের ৬ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি।

২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবর ফেসবুকে গুজব রটিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরসহ শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় নাসিরনগর গৌরমন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল চৌধুরী বাদী হয়ে দুই থেকে আড়াই হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর ২২৮ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। চার্জশিটে ২২৮ আসামির মধ্যে নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক মো. আবুল হাসেম এবং হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমানের নামও উল্লেখ করা হয়। উভয়েই বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

জেলা আওয়ামী লীগ জানায়, এ নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করায় আলোচিত দুই প্রার্থীর বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। এতে তারা যে মন্দির ভাঙচুর মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি সেটিও উল্লেখ করা হয়েছিল। তাদের মনোনয়ন বাতিল করতে কেন্দ্রে চিঠি পাঠিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ। আজ বৃহস্পতিবার বিকালে এই দুই ইউনিয়নে প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী। ওই দুই প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করতে কেন্দ্রে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্র থেকে এরইমধ্যে মুঠোফোনে আমাদের জানিয়েছে, তাদের মনোনয়ন বাতিল করা হবে। আজ বিকালের পর নতুন প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

ইউএইচ/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply