চার কিলোমিটার সড়কজুড়েই খানাখন্দ আর পানি। রূপসা ট্রাফিক মোড় থেকে সেতু পর্যন্ত গোটা সড়ক জলে ভাসা। স্থানীয়রা রাস্তাটির নাম দিয়েছেন নদী সড়ক। খুলনা নগরীর ট্রাফিক মোড় থেকে রূপসা সেতু পর্যন্ত সড়কটির এমনই দুরাবস্থা। অথচ এটি হওয়ার কথা ছিল চার লেন। খুলনা সিটি করপোরেশন আর খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রশি টানাটানিতে শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি।
খুব বেশি প্রয়োজন না হলে এই সড়কে মানুষ বা যানবাহন চলে না। অথচ রূপসা সেতু হয়ে নগরে প্রবেশের অন্যতম পথের পাশাপাশি ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়ক এটি। সাধারণ মানুষ বলছেন, সবসময়ই পানি জমে থাকায় এটিকে নদীই মনে হয়। সবাই বলে, রূপসার পাশে নদী আরেকটা আছে, তার নাম নদী সড়ক।
ক্ষোভ প্রকাশ করে নাগরিকরা বলেন, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আর সিটি কর্পোরেশনরে পরস্পর দোষারোপের কবলে পড়ছেন তারা। কে ঠিক করবে সড়কটি? কারোই যদি দায়বদ্ধতা না থাকে, তাহলে কি সাধারণ মানুষ ঠিক করবে এই সড়ক? নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটছে সড়কটিতে। কত মানুষ মরলে টনক নড়বে তাদের? এমনসব প্রশ্নই ক্ষুব্ধ নাগরিকদের সার।
২০১০ সালে ট্রাফিক মোড় থেকে শিপইয়ার্ডের হয়ে রূপসা সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়নের কাজ হাতে নেয় কেডিএ। ২০১৩ সালের একনেক সভায় অনুমোদনের পর তিন দফায় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রায় ৯৯ কোটি টাকার প্রকল্পের ব্যয় বাড়তে বাড়তে এখন ২৫৯ কোটি টাকা। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রি. জেনারেল মোঃ মাহবুবুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা গেলো, সড়কটির কাজ শুরু হয়নি এখনও। তারা কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও রাস্তা অধিগ্রহণ ও ঠিকাদার নিয়োগের কাজ এখনও শুরু হয়নি।
অন্যদিকে জনদুর্ভোগ মেনে নিয়ে মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলছেন, ২০১৩ সালে সড়কটি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কেডিএকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তাদের উদাসীনতার দায় কোনোভাবেই নেবে না সিটি করপোরেশন।
এক সময় শহরের যানজট ও দূরত্ব এড়িয়ে রূপসা সেতুতে যেতে এই সড়কটিকেই বেছে নিতেন বেশিরভাগ যানবাহন চালক। আর এখন চালকরা এই সড়কটিকেই এড়িয়ে চলতে চান।
Leave a reply