পাওয়ার প্লে এবং ডেথ ওভারে বোলিং-ব্যাটিং দুই বিভাগেই ঠিক মতো পারফর্ম করতে পারছে না বাংলাদেশ। আর এটাই সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ এখন মাহমুদউল্লাহর দলের জন্য। আর মুশফিকুর রহিমের ৮ নাম্বারে ব্যাটিং করা ছিল দলীয় সিদ্ধান্ত, জানিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
স্কটল্যান্ড ম্যাচে হোঁচট খাওয়ার পর ওমান যেন ছিল বাংলাদেশের কাছে এক দানবের নাম! যতটা না নিজেদের পারফরম্যান্সে তার চেয়ে বেশি বাংলাদেশের কল্যাণে। সহযোগী দেশ দুটির বিপক্ষে এমন কঠিন পরীক্ষার পর প্রশ্ন উঠতে পারে মূল পর্বে কী করবে বাংলাদেশ।
ওমান ম্যাচে ১৩ ওভার ২ বলে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১০১। পাওয়ার প্লের ফায়দা নিতে না পারলেও ম্যাচ বিবেচনায় শক্ত অবস্থানে ছিল টাইগাররা। তবে সাকিবের বিদায়ে উইকেটে মুশফিকের পরিবর্তে আসেন নুরুল হাসান সোহান। মুশফিক উইকেটে আসেন ৮ নম্বরে। ২০১০ ও ২০১৬ সালের পর তৃতীয়বারের মতো এতো পরে ব্যাট করতে এলেন মুশফিক। মিস্টার ডিপেন্ডেবলের ৮ নম্বরে ব্যাটিং অবাক করেছে অনেককেই। তবে সাকিব জানালেন, সেটি ছিল দলীয় সিদ্ধান্ত। হয়তো ডেথ ওভারে মুশফিকের বহুমাত্রিক ব্যাটিং দক্ষতাকে কাজে লাগাতে চেয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট।
তবে গত ২ সপ্তাহে ওমান ম্যাচসহ সব মিলিয়ে ৫ ম্যাচের অভিজ্ঞতা বলছে, বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লে আর স্লগ ওভারের দুর্বলতা যেন কিছুতেই কাটছে না। স্কটল্যান্ড ও ওমানের সাথে পাওয়ার প্লে’তে যথাক্রমে ২৫ ও ২৯ রান সংগ্রহ করতে পেরেছে টাইগাররা। দুই ম্যাচেই হারাতে হয়েছে দুটি করে উইকেট। রান রেটের দৈন্যতার সাথে টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারের বিদায় শুরুতেই ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় বাংলাদেশকে।
এবার দেখা যাক ডেথ ওভারের খতিয়ান। গত দুটি ম্যাচেই স্পষ্ট, শেষ পাঁচ ওভারে ব্যাট হাতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাটাররা। বরং, দেদারসে হারিয়েছে উইকেট। এতে প্রভাব পড়েছে আরেকটা জায়গায়ও। মাঝের ওভারগুলোয় দুটি ম্যাচেই ভালো করেছে ব্যাটাররা। কিন্তু ডেথ ওভারে নিয়মিতভাবে উইকেট হারানোয় কাজে লাগানো যায়নি বাড়তে থাকা রান রেট। কেউই পালন করতে পারেননি অতি গুরুত্বপূর্ণ ‘অ্যাঙ্কর’ এর ভূমিকা, যিনি আগলে রাখতে পারতেন একপ্রান্ত।
স্কটল্যান্ডের সাথে শেষ পাঁচ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে ৪৭ রান, হারিয়েছে ৩ উইকেট। মাঝের ৯ ওভারে (৬-১৫) মাত্র ২ উইকেট হারালেও সে ম্যাচে ৬২ রান তুলেছিল টাইগার ব্যাটাররা।
অন্যদিকে ওমানের সাথে ম্যাচে মাঝের ৯ ওভারে ৮.৯ রান রেটে ২ উইকেট হারিয়ে ৮০ রান করেছে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ নাইম এই ম্যাচে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন বলেই সম্ভব হয়েছে এই গতিতে রান তোলা। তবে ১৭ তম ওভারে নাইম ফিরে গেলে আবারও ডেথ ওভারে আগ্রাসী ব্যাটিং করার সুযোগ হারিয়ে ফেলে টাইগাররা।
সামনের ম্যাচ অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। সে ম্যাচে পাওয়ার প্লে’তে উইকেট না হারানোর সাথে সাথে রান রেট বাড়িয়ে রাখা সম্ভব হলে নিজেদের শক্তির জায়গা মাঝের ওভারগুলোকে কাজে লাগাতে পারবে বাংলাদেশ। সেই সাথে বাউন্ডারির দিকে বেশি জোর দেয়ার চেয়ে সিঙ্গেল ও ডাবলসের সাহায্যে রানের চাকা সচল রাখতে পারলে শেষদিকে হাত খুলে খেলার ক্ষেত্রও পেয়ে যাবে ব্যাটাররা। কারণ পাওয়ার হিটিংয়ে বাংলাদেশের দুর্বলতার সাক্ষ্য বহন করছে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ; যেখানে হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলে একে একে ফিরে গেছেন সৌম্য, লিটন, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ, সোহানরা।
এম ই/
Leave a reply