চুরি হয়ে গেছে মাদারীপুরের শতবর্ষী ঐতিহাসিক নিদর্শন

|

ঐতিহ্যবাহী ও শতবর্ষী পিতলের এ পাতিলটি চুরি হয়ে গেছে।

স্টাফ রিপোর্টার:


মাদারীপুরের শিবচরের দত্তপাড়া ইউনিয়নের মগড়া পুকুরপাড় গ্রামের খবির উদ্দিন মৌলভীর বাড়ির প্রাচীন নিদর্শন শতবর্ষ আগের একটি পিতলের পাতিল চুরি হয়ে গেছে। প্রাচীন নিদর্শনটি চুরির ঘটনায় শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিরাজ হোসেনসহ পুলিশের দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ শুক্রবার (২২ অক্টোবর) ফজরের নামাজের সময় মৌলভী বাড়ির পীর মরহুম খবির উদ্দিন মৌলভীর নাতি হাবিব মুন্সী মসজিদে এসে দেখেন শতবর্ষী পাতিলটি আর নেই। পাতিল যেখানে রাখা ছিল ওই ঘরের একটি খুঁটি ভেঙে পাতিলটি কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গেছে। সাথে সাথে বাড়ির সকলকে বিষয়টি জানিয়ে পুলিশে খবর দেন হাবিব মুন্সী।

পরে দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সাথে নিয়ে ইতোমধ্যে তদন্তও শুরু করেছে। স্থানীয় একটি বাড়ির সিসি ক্যামেরার অস্পষ্ট ফুটেজ পর্যবেক্ষন করে পুলিশ দেখতে পায় যে, ভোর রাত ৩ টার দিকে একটি ব্যাটারি চালিত ভ্যানে করে কাপড়ে ঢাকা পাতিল সদৃশ্য কিছু একটা নিয়ে যাচ্ছে ৩/৪ জন লোক। পুলিশের ধারণা, ভ্যানে করেই শতবর্ষী ওই পাতিলটি চুরি করে নিয়ে যায় চোরচক্র।

মৌলভীবাড়ির পীর মরহুম খবির উদ্দিন মৌলভীর নাতি হাবিব মুন্সী বলেন, ফজরের নামাজের সময় মসজিদে এসে দেখি পাতিলটি নাই। পাতিল যেখানে রাখা ছিল ওই ঘরের একটি খুঁটি ভেঙে চোরেরা পাতিলটি বের করেছে। এই পাতিলটিটি একশত বছর আগের হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ সেটি দেখতে আসতো।

হাবিব মুন্সী আরও জানান, আমার মরহুম নানা মাওলানা খবির উদ্দিন আহমেদ আল কাদেরী প্রায় ১০০ বছর পূর্বে বাগদাদ থেকে এ পাতিলটি এনেছিলেন। তার মাজারের পাশে একটি খোলা ঘরে এ পাতিলটি রাখা ছিল দর্শনার্থীদের জন্য। পাতিলটির উপর খোদাই করে লেখা ছিল, ডেগ চে পিরানে পীর সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী, গোলাম ফকির, শ্রী মৌলবি খবির উদ্দিন কাদেরী, সাং- উৎরাইল, সন-১৩১৯। বাকি লেখাটুকু অস্পষ্ট ছিল। এ লেখা দেখেই ধারণা করা হয় যে পাতিলটি বাগদাদ থেকে আনা।

জানা গেছে, ঐতিহাসিক এ পাতিলটির উচ্চতা ছিলো ৩ ফুট ৬ ইঞ্চি আর আয়তন ছিলো ১৪৮ ইঞ্চি। পাতিলের মুখে লাগানো ৪ টি রিংয়ের ওজন ছিলো প্রায় ৪ কেজি করে। পাতিলটি এতটাই ভারী ছিলো যে সেটি স্থানান্তরের জন্য পূর্ণবয়স্ক ১৪-১৫জন লোক লাগতো এবং কমপক্ষে ৯-১০ মণ খিঁচুড়ি পাতিলটির মধ্যে রাখা যেতো বলে জানান স্থানীয়রা।

শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ মো.মিরাজ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয় একটি বাড়ির সিসি টিভির ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চোরচক্রকে ধরতে অভিযান চলছে।

/এসএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply