একসময় সুদি মহাজনদের চাপে দিশেহারা থাকতো গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষ। নাটোরের হালসায় দেখা মিলেছে কালাম মণ্ডল নামে তেমনই এক সুদ কারবারির। তার দৌরাত্ম্যে ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন সাধারণ মানুষ।
এছাড়া চক্রবৃদ্ধি হারে সুদের টাকার কারণে দেশান্তরীও হয়েছেন অনেকেই। সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে দখলবাজি, হুমকি ধামকিসহ হামলা, মারধরের মতো ঘটনা ঘটাতেন কালাম। দীর্ঘদিন ভয়ে কেউ মুখ না খুললেও সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার হওয়ায় একে একে বেড়িয়ে আসছে তার অপকর্মের নানা ফিরিস্তি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন নাটোরের হালসা ইউনিয়নে নানা অপকর্মের হোতা সুদ কারবারি কালাম মণ্ডল। সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রেখে ইচ্ছে মতো টাকার পরিমাণ বাড়ানো, সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জমি, দোকান দখল, হামলা, মারপিটসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কালাম মণ্ডলের কাছে জিম্মি একটি ইউনিয়নেরই অন্তত দেড় শতাধিক পারিবার।
সুদ ব্যবসার কারণে প্রতিনিয়িত নানা অনাকাঙ্খিত ঘটনায় এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে হয়রানির ভয়ে এলাকা ছেড়েছেন অনেকেই। তাই এই অবৈধ ব্যবসা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি এলাকার সাধারণ মানুষের।
যদিও গ্রেফতারের আগে গণমাধ্যমের কাছে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন কালাম মণ্ডল। সুদ কারবারি কালাম এমনসব অভিযোগকে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন। তবে তার ছোটভাই মকসেদ মণ্ডল অকেপটে বলেন, তার ভাই কালাম সুদি কারবারের সাথে জড়িত।
পুলিশের তদন্তে কালাম মণ্ডলের নানা অপকর্মের তথ্যপ্রমাণ মিলেছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এছাড়া জেলার সব সুদ কারবারিদের তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশ্বাস দিলেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ ও জেলা পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা।
তবে বহুল আলোচিত সুদ কারবারি কালাম মণ্ডলের গ্রেফতারে আপাতত স্বস্তিতে আছেন স্থানীয়রা। তবে অনেকেরই শঙ্কা আইনের ফাঁকফোকড় দিয়ে হয়তো আবার বেরিয়ে আসতে পারে ওই সুদকারবারি।
Leave a reply