ওয়াসার পানি বিশুদ্ধ করতে নগরবাসীর খরচ দিন দিন বাড়ছে। গ্যাস, ফিল্টার, বিদ্যুতের খরচ সুপেয় পানিকে দামি করে তুলছে ক্রমান্বয়ে। নগরবাসীর প্রশ্ন, টাকা দিয়ে ওয়াসার পানি কিনে কেন আবার বিশুদ্ধ করতে খরচ করতে হবে? এদিকে পানির দূষণ হিসেব করলে ৪৪ ভাগ মানুষ নিরাপদ ও সুপেয় পানির আওতার বাইরে আছে। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জন এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
পানির অপর নাম জীবন। রাজধানীবাসীকে অতি প্রয়োজনীয় এই পানি সরবরাহ করে ঢাকা ওয়াসা। কিন্তু ওয়াসার সেই পানি আসলে কতটা বিশুদ্ধ? ওয়াসার কাছ থেকে কেনা পানিই আবার পান করতে হয় ফুটিয়ে বা ফিল্টারিং করে। এতে নগরবাসীকে বহন করতে হচ্ছে বাড়তি খরচের বোঝা।
এ তো গেলো বাসাবাড়ির কথা, হোটেল-রেস্টুরেন্টেও একই অবস্থা। অথচ বিশুদ্ধ করার জন্য বিল বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়ছে পানির দাম। টিআইবির ২০১৯ সালের গবেষণা বলছে, ওয়াসার পানির ওপর আস্থা নেই অধিকাংশ নগরবাসীর। তাই জীবানুমুক্ত করতে ৯১ শতাংশ ব্যবহারকারী পানি পান করেন ফুটিয়ে। তাছাড়া, ফিল্টারিং খরচ আর বিদ্যুৎ বিল তো আছেই। এতে জ্বালানি বাবদ প্রতিবছর ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩৩৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের গবেষণা বলছে, ঢাকায় পানির স্তর ভূপৃষ্ঠ থেকে গড়ে ২১২ ফুট নিচে চলে গেছে। এ অবস্থায় অব্যাহতভাবে পানি তোলা হলে আগামীতে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি চলে আসতে পারে। ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের আশঙ্কা, এভাবে পানির স্তর নিচে নেমে গেলে, একসময় শুধু পানির অভাবেই ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হবে মানুষ।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ নাগরিকের জন্য নিশ্চিত করতে হবে সুপেয় পানি। কিন্তু এখন তা পাচ্ছে শতকরা ৫৬ ভাগ মানুষ৷ অন্যদিকে বাংলাদেশে পানির উৎস থাকলেও সুপেয় পানির সংকট বেড়েই চলেছে।
Leave a reply