অস্ট্রেলিয়ার উত্তর উপকূলের টোরেস প্রণালীতে অবস্থিত সেই দ্বীপগুলোর অভিযোগ ছিল, জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে হুমকির মুখে থাকা তাদের বাসভূমিকে সুরক্ষিত রাখতে ‘ব্যর্থ’ হয়েছে। ফলাফল, সেই দ্বীপগুলো মঙ্গলবার মামলাই ঠুকে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের বিরুদ্ধে।
মামলার বাদীপক্ষের এক মুখপাত্র জানান, টোরেস প্রণালীতে বৈগু ও সাইবাই নামে যে গহীন দ্বীপগুলো আছে, তাদের সুরক্ষার্থেই জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে এই প্রথম কোনো ‘অ্যাকশনে’ গেলেন তারা!
কাকতালীয় ব্যাপার হলো, যেদিন এই মামলাটি দায়ের হলো, ঠিক সেইদিন, অর্থাৎ মঙ্গলবার দেশটির রাজধানী ক্যানবেরাতে ২০৫০ সাল নাগাদ কার্বন নিঃসরণ শূন্যতে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
এই মামলাটি গঠন হয়েছে আরেকটি প্রাসঙ্গিক পূর্বতন ঘটনার ‘মডেল’ অনুযায়ী। আর্জেন্ডা ফাউন্ডেশন নামের এক পরিবেশ বিষয়ক সংস্থাও নেদারল্যান্ডসের সরকারের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিয়েছিল। তাদের ভাষ্য হলো, ডাচ নাগরিকদের জলবায়ু পরিবর্তন থেকে বাঁচানো নেদারল্যান্ডস সরকারের আইনগত দায়িত্ব। সেই ঘটনার ফলাফলস্বরূপ নেদারল্যান্ডসের উচ্চ আদালত দেশটির সরকারকে আদেশ দেয়, তাদের নিজস্ব পরিকল্পনার চেয়েও দ্রুতগতিতে কমাতে হবে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা।
এদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ছে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা। তাই টোরেস প্রণালীর সেই দ্বীপগুলো আছে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে। অন্যদিকে মাটি ও খাবার পানির উৎসগুলোকেও ধীরে ধীরে গ্রাস করছে লবণাক্ততা।
মামলার দুই বাদীর একজন পল কাবাই বলেন, এই দ্বীপে আমরা ৬৫ হাজার বছর যাবত বাস করে আসছি। কিন্তু ডুবে যাওয়া কিংবা ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় হয়তো আমাদের সবাইকে জোর করে এই দ্বীপ থেকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু শরণার্থী’ হওয়া মানে বাড়ি, সংস্কৃতি, গল্প এবং আমাদের পরিচয়সহ নিজেদের সবকিছু হারানো।
উল্লেখ্য, গ্রেটা ফান্ড নামে একটি অলাভজনক সচেতনতা প্রতিষ্ঠান এই মামলাটিতে সহায়তা প্রদান করছে। দ্বীপের নাগরিকেরা এর আগেও জাতিসংঘে মানবাধিকার সংক্রান্ত একটি অভিযোগ করেছিল, যার মীমাংসা হয়নি আজও।
Leave a reply