গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুর জেলা পুলিশ লাইন্সে কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে এক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আর তার মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। স্বজনদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ওই যুবক বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। তবে পুলিশ ও পল্লী বিদ্যুৎ কতৃপক্ষ এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পায়নি বলছে।
শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে জেলা পুলিশ লাইন্সে এ ঘটনা ঘটে।
২০ বছর বয়সী নিহত ফাহিম চৌধুরী গাজীপুর মহানগরীর উত্তর খাইলকুর এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আল আমিন জানান, শুক্রবার সকালে ফাহিম চৌধুরী পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের প্রাথমিক পরীক্ষায় অংশ নিতে গাজীপুর জেলা পুলিশ লাইন্সে যান। পরীক্ষা চলাকালে ফাহিম পুলিশ লাইন্সের ভেতরে থাকা একটি ট্রান্সমিশন টাওয়ারের সাথে হেলান দেন। এক পর্যায়ে তিনি হঠাৎ করেই সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মহানগর পুলিশের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে রাতে একটি অপমৃত্যু মামলা করা হবে।
নিহতের বন্ধু মো. বিল্লাল হোসেন জানান, তিনিও পুলিশ লাইনে নিয়োগের বাছাই পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। প্রচণ্ড রোদের কারণে ফাহিমসহ তারা কয়েকজন একটি টাওয়ারের নিচে ছায়ায় অবস্থান নেন। একপর্যায়ে ফাহিম টাওয়ারের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের বাইরে লোহার এসির খাঁচায় স্পর্শ করেন। এসময় তিনি বিদ্যুৎষ্পৃষ্ট হলে শুকনো বাঁশের আঘাতে ফাহিমকে বিদ্যুৎ মুক্ত করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম জানান, টাওয়ার থেকে বিদ্যুতায়িত হওয়ার খবর পাওয়ার পর গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের খবর দেয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা ওই টাওয়ারে কোনো বিদ্যুত সংযোগের প্রমাণ পায়নি বলেও জানান তিনি।
আর গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম মো. এনায়েত হোসেন জানান, জেলা পুলিশ লাইনে গিয়ে ট্রান্সমিশন টাওয়ারটি পরীক্ষা করে দেখা গেছে সেটি বিদ্যুতায়িত হয়নি। স্পর্শ করলে বিদ্যুৎষ্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটারও কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি বলে মন্তব্য তার।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক মো. রোমান আল মামুন জানান, দুপুরে ময়নাতদন্ত করে নিহতের হৃদপিণ্ডের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে। নমুনার ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
Leave a reply