মোবাইল নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি এবং মানসম্পন্ন সেবার জন্য বেজ ট্রান্সসিভার স্টেশন বা বিটিএস বসানো হয়। যা মোবাইল টাওয়ার নামে পরিচিত। কিন্তু গ্রাহক সংখ্যার তুলনায় টাওয়ার অনেক কম। যার প্রভাব পড়ছে টেলিযোগাযোগ সেবায়। ব্যাহত হচ্ছে কোয়ালিটি অব সার্ভিস। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোবাইল অপারেটরদের নিজেদের মধ্যে শেয়ারিং করে টাওয়ার ব্যবহারের হার অসন্তোষজনক। এমনকি মোবাইল অপারেটরগুলো টাওয়ারকো কোম্পানির মালিকানায় থাকা টাওয়ারগুলোর মাত্র ৩৫ শতাংশ শেয়ার করছে।
এক সময় এই অপারেটরগুলো নিজেরা মোবাইল নেটওয়ার্ক পরিচালনার জন্য টাওয়ার বসাতো। ২০১৮ সালের নভেম্বরে বিটিআরসি চারটি টাওয়ার কোম্পানিকে লাইসেন্স দেয়। বিটিআরসির নীতিমালায় বলা হয়েছে, মোবাইল অপারেটরগুলো আর কোনো টাওয়ার বসাতে পারবে না। তবে তাদের হাতে পুরানো টাওয়ারগুলো থাকতে পারবে।
বিটিআরসির নীতিমালা অনুযায়ী, লাইসেন্স পাওয়ার প্রথম বছরে টাওয়ার কোম্পানিগুলোকে দেশের সব বিভাগীয় শহরে সেবা সম্প্রসারণ করতে হবে। দ্বিতীয় বছরে জেলা শহর, তৃতীয় বছরে ৩০ শতাংশ উপজেলা, চতুর্থ বছর ৬০ শতাংশ উপজেলা ও পঞ্চম বছরে দেশের সব উপজেলায় টাওয়ার বসাতে হবে। চুক্তি সংক্রান্ত জটিলতায় প্রায় দুবছর থমকে ছিল তাদের কাজ। তিন বছরের অবকাঠামো পরিবর্তন করার জন্য কিছুটা সময় লাগছে বলে দাবি টাওয়ার নির্মাণের লাইসেন্স প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর। অবশ্য সেবা পর্যায়ে চুক্তি বা সার্ভিস লেভেল অ্যাগ্রিমেন্ট নিয়ে জটিলতায় নতুন টাওয়ার স্থাপন ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে মোটামুটি দুই বছর থমকে ছিল।
দেশে ২৫ হাজারের মতো টাওয়ার মোবাইল অপারেটরগুলোর হাতে আছে। তার ১৫ শতাংশের মতো ভাগাভাগি হয়। অপারেটরগুলো নিজেরা চাইলে নিজেদের টাওয়ার অন্য অপারেটরকে ব্যবহার করতে দিতে পারে। ইডটকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, সামিট টাওয়ারস লিমিটেড, কীর্তনখোলা টাওয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড ও এবি হাইটেক কনসোর্টিয়াম লিমিটেড—এই চার প্রতিষ্ঠান এখন টাওয়ার বসানো ও পরিচালনা করছে।
টাওয়ার কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়ার যুক্তি হিসেবে ২০১৮ সালে বিটিআরসি বলেছিল, ভাগাভাগি করে ব্যবহার নিশ্চিত করতেই টাওয়ার কোম্পানি গঠনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এতে টাওয়ার বসাতে মোবাইল অপারেটরগুলোর বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে না। টাওয়ারের অনিয়ন্ত্রিত সংখ্যা ভূমি, বিদ্যুতের ব্যবহার ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
Leave a reply