রাস্তায় রাস্তায় কাজের আশায় ঘুরতেন তিনি। ছিল না কোনো থাকার জায়গা। রাস্তায় কিংবা পার্কের বেঞ্চে শুয়েই রাত কাটাতে হতো তাকে। সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আজ তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। কোনো জাদুকাঠির ছোঁয়ায় নয়, বরং পরিশ্রম আর বুদ্ধির জোরেই নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের যুবক নিক মকুটা।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাত্র ২১ বছর বয়সে দাদির দেয়া ৫০০ ডলার পকেটে নিয়ে রোমানিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন নিক। প্রথমে নিক ভেবেছিলেন, এই অর্থে কিছুদিন হয়তো কেটে যাবে। আর সেই সময়ের মধ্যেই একটা কাজ জুটিয়ে নেবেন।
কিন্তু অল্প সময়েই নিকের ভুল ভেঙে যায়, যখন ট্যাক্সিতে উঠে ১০০ ডলার ভাড়া মেটাতে হয়। ভাল ইংরেজিও তখন বলতে পারতেন না নিক। দাদির দেয়া ৫০০ ডলার থেকে ১০০ ডলার ট্যাক্সি ভাড়া দেয়ার পর হাতে থাকে মাত্র ৪০০ ডলার। সেটা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের রাস্তায় রাস্তায় কাজের আশায় ঘুরতেন তিনি। রাত কাটাতেন রাস্তার ধারে বা পাবলিক পার্কের কোনো বেঞ্চে শুয়ে।
এভাবে এক সময় পার্কিং লটে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ পান নিক। তা দিয়ে দিনের খাবার জুটে যেত। তাও আধপেটা। দোকানে গিয়ে বার্গারে চিজ দিতে নিষেধ করতেন নিক, যাতে বেশি খরচ না হয়। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ করতে করতেই ইংরেজি ভাষা ভালোভাবে রপ্ত করেন নিক।
রিয়েল এস্টেট এজেন্ট হিসেবে লাইসেন্স জোগাড় করে ফেলেন। তাতেও খুব বেশি আয় হচ্ছিল না। ২০১৩ সালে পরিচিত কয়েকজনকে দেখে অনলাইনে ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী বিক্রি শুরু করেন। আর তাতেই বাজিমাত করেন নিক। প্রথম মাসেই প্রায় ৩ লাখ ডলার আয় করেন তিনি।
এখন তিনি প্রায় তিনশো কোটির মালিক। যুক্তরাষ্ট্রে একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে তার। রয়েছে চারটি বিলাসবহুল গাড়ি। বাড়ি থেকেই কাজ করেন আর কোটি কোটি আয় করেন। ব্যর্থতাকে ভয় না পাওয়া এবং হার না মানা মানসিকতাই তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে বলে মনে করেন ৩৭ বছর বয়সী এই যুবক।
Leave a reply