
একজন শিক্ষক দিয়েই চলছে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির সকল বিষয়ের পাঠদান। তিনি আবার পালন করছেন প্রধান শিক্ষকেরও দায়িত্ব। সামলাচ্ছেন অফিসের সব কাজ। আবার তিনিই পালন করছেন বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরীর দায়িত্বও ।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার জগন্নাথপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির পাঠদানের দায়িত্ব মাত্র একজনই সম্পন্ন করছেন। একাই করছেন অফিসের সকল কাজ, যা সারতে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থাকতে হচ্ছে বিদ্যালয়ে। ৩৫০ জনেরও বেশি ছাত্রীর এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকার কথা ৯ জন। কিন্তু একাই আছেন জয়ন্ত শেখর রায়। কাগজেপত্রে আরও ২ জন শিক্ষক থাকলেও তাদের একজন প্রেশনে রয়েছেন ময়মনসিংহে, অন্যজন উচ্চতর প্রশিক্ষণে টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে। এতে বিপাকে শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়েটির প্রধান শিক্ষক নেই ২০১৮ সাল থেকে। সহকারী প্রধান শিক্ষক না থাকায় তার কক্ষটিও দীর্ঘদিন ধরেই তালাবদ্ধ। অবস্থা এমন যে তালায়ও ধরে গেছে মরিচা। ভবন আর শ্রেণিকক্ষ সবই আছে, কিন্তু খোলা হয় না অধিকাংশ কক্ষের তালা। শিক্ষার্থীরা ক্লাস পাচ্ছে দিনে ২টির স্থলে একটি করে। এতে নিজেও চিন্তিত শিক্ষক জয়ন্ত শেখর রায়। বললেন, বিবেকবোধ থেকেই যতটা পারছেন করে যাচ্ছেন।
উপজেলার একমাত্র সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এমন সংকটময় পরিস্থিতি জেনেও সন্তানের সুন্দর জীবন আশা করে পাঠগ্রহণে তাদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন অভিভাবকরা। তবে তারাও শঙ্কায়। ফলাফল নিয়ে হতাশার পাশাপাশি দায়িত্বশীলদের ব্যাপারে ক্ষোভ কম নয়।
বিদ্যালয়টিতে এই শিক্ষকের সাথে আছেন একজন অফিস সহায়ক। এলাকার লোকজন ছুটির ঘণ্টাসহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও শিক্ষককে চা পরিবেশনের জন্য অস্থায়ীভাবে ২ জন কর্মচারী নিয়োগে সহযোগিতা করেছেন। নৈশ প্রহরী পদে কেউ না থাকায় শিক্ষক জয়ন্তকেই রাতেও বিদ্যালয়ে সময় দিতে হচ্ছে।
শিক্ষক জয়ন্ত শেখর রায় বলছেন, ঊর্ধ্বতনদের এই সংকটের বিষয়ে বারবার বলা হয়েছে, ২ বছরেও কোনো কার্যকর ফলাফল মেলেনি। তাই শিক্ষকতার পাশাপাশি নৈশ প্রহরীর কাজ করেও চালাতে হচ্ছে বিদ্যালয়।
সুনামগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম জানান, এমন সংকট নিয়ে তারাও ঢাকায় জানিয়েছেন, কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি।



Leave a reply