মৃত্যুদণ্ড আটকাতে প্রতিবাদ; মিরাকলের আশায় পরিবার

|

নাগানথ্রামের মৃত্যুদণ্ড রহিতের দাবিতে প্রতিবাদ। ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি কারাগারে মৃত্যুদণ্ডের প্রহর গুনছেন নাগানথ্রাম ধার্মালিঙ্গম। তার বোন শর্মিলা আশায় আছেন, কোনো একটা মিরাকল ঘটবে আর তার ভাই ফিরে পাবেন বেঁচে থাকার সুযোগ। অন্যদিকে, এই মৃত্যুদণ্ড রহিতের দাবিতে সংগ্রহ চলছে গণসাক্ষর, রাস্তায় চলছে প্রতিবাদ।

২০০৯ সালে মালয়েশিয়া থেকে সিঙ্গাপুরে হেরোইন পাচার করতে গিয়ে ধরা পড়েন নাগানথ্রাম ধার্মালিঙ্গম। তখন তার বয়স ছিল ২১ বছর। সিঙ্গাপুরে মাদক আইন পুরো পৃথিবীর মধ্যেই অন্যতম কঠোর। এবং মালয়েশিয়ার এই নাগরিককে মাদক চোরাচালানের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার আদেশ দেয়া হয়। তবে মেডিকেল এক্সপার্টরা জানিয়েছেন, নাগানথ্রামের আইকিউ মাত্র ৬৯ এবং এত কম আইকিউ সম্পন্ন মানুষকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তার উপর বিশ্বের অনেক দেশেই যখন মৃত্যুদণ্ডের প্রথাকে মানবাধিকারের সাথে সংঘাতপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়, সেখানে বুদ্ধিবৃত্তিক পর্যায়ে পিছিয়ে থাকা একজন মানুষকে মৃত্যদণ্ডে দণ্ডিত করার এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অশান্ত হয়ে আছে সিঙ্গাপুর।

নাগানথ্রাম ধার্মালিঙ্গম। ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্টের প্রতি নাগানথ্রামকে ক্ষমা করে দেয়ার দাবিতে চলছে গণসাক্ষর সংগ্রহের কর্মসূচি। এ পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি মানুষ সাক্ষর দিয়ে জানিয়েছেন, তারা চান নাগানথ্রামকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে সংশোধনের সুযোগ দেয়া হোক। অহিংস অপরাধের কারণে একজন বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর সর্বোচ্চ শাস্তি মেনে নিতে চাইছে না অনেক সিঙ্গাপুরবাসী।

তবে সিঙ্গাপুর সরকার এসবে কর্ণপাত করছে না। তারা জানিয়েছে, ভালো এবং খারাপের বিবেচনাবোধ অভিযুক্তের মধ্যে খুব প্রবলভাবেই আছে। তাই তাকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হিসেবে বিবেচনা করার কোনো সুযোগ নেই।

গত ৩ নভেম্বর ছিল নাগানথ্রামের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন। তবে তার ঠিক আগের দিনই (২ নভেম্বর) শনাক্ত হয় যে, তিনি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত। এতে পিছিয়ে যায় তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন।

শর্মিলা ধার্মালিঙ্গম, নাগানথ্রামের বোন বিবিসিকে বলেন, যখন আমি একা থাকি এবং আমার ভাইয়ের কথা ভাবি, তখন প্রচণ্ড কষ্ট হয়। কিন্তু সাহস ধরে রাখতে হবে। আমি তার জন্য প্রার্থনা করে যাবো। কারণ, যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। ভাইয়ের সাথে যখনই কথা হয়, সে বলে, যেকোনো সময় তাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হবে। আর সে জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় আর খুব বেশি নেই। আমার মনে হয়, সে নিজেই জানে না তার জন্য কী অপেক্ষা করছে।

তথ্যসূত্রঃ বিবিসি


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply