ফাগুইবাইনের মৃত্যু, ধুকছে মালির মানুষ

|

ছবি: সংগৃহীত

যত দূর চোখ যায় কেবলই ধু ধু মরুভূমি। সবুজের ছিটেফোঁটাও দেখা মেলে না। অথচ একটা সময় এখানেই ছিল সবুজ প্রান্তর আর বিশাল জলাশয় ফাগুইবাইন। বলছি পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির কথা।

বিস্তীর্ণ মরুভূমি, এর মধ্যে একটু স্বস্তি দিতো মালির তিমবাকতু প্রদেশের বিন্তাগোঙ্গু এলাকা। পশ্চিম আফ্রিকার সবচেয়ে বড় হ্রদ ফাগুইবাইনের দেখা মিলতো অঞ্চলটিতে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও বনভূমি উজাড়ের প্রভাবে বিশাল এই হ্রদটি এখন শুধুই বালুময় প্রান্তর। এর ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে বাসিন্দাদের ওপর। মিলছে না সুপেয় পানি, ফলছে না ফসল। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহযোগিতার আহ্বান কর্তৃপক্ষের।

ভুক্তভোগীরা জানান, পুরো এলাকাতে পানি ছিল। লেকের পাড় দিয়ে গাছ জন্মেছিল। এরপর হঠাৎ কি যে হলো, লেক শুকাতে শুরু করলো। গাছগুলোও মারা যেতে থাকলো।

জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি লেকটির মৃত্যুতে বড় ভূমিকা রেখেছে মালির মানুষও। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে এলাকাটিতে আশ্রয় নেন বহু উদ্বাস্তু। নির্বিচারে উজাড় করেন বনভূমি। ফলাফল, ছয় দশকে সবুজে ভরা এলাকাটি হয়ে উঠেছে ধুসর প্রান্তর।

আরেক ভুক্তভোগী জানান, এখানে একসময় বিস্তীর্ণ বনভূমি ছিল, লেক ছিল। বনভূমি উজাড় হবার পর দেখা দিলো খরা। প্রথম বিদ্রোহের সময় গৃহহীনরা এই এলাকায় আসতে শুরু করে। বন ধ্বংস করে তারা।

এমন পরিস্থিতিতে সবুজায়নের মাধ্যমে পরিস্থিতি উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান বিন্তাগোঙ্গু প্রশাসনের।

বিন্তাগোঙ্গুর মেয়র হামা আবাক্রিন বলেন, এই এলাকার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সব খোয়ানো একটি প্রজন্ম। এখানে সবার আগে সমস্যা চিহ্নিত করে সেটি সমাধান করা প্রয়োজন। যত দ্রুত সম্ভব হ্রদে পানি ফেরাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। যাতে মানুষ কিছু করে খেতে পারে।

লেকের মৃত্যুতে কৃষিকাজ ছাড়তে হয়েছে স্থানীয়দের। পরিসংখ্যান বলছে, গেল পাঁচ দশকে এলাকাটিতে পেশা বদলাতে বাধ্য হয়েছেন দুই লাখের বেশি মানুষ। পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে এই শতকের মধ্যেই, অঞ্চলটির তাপমাত্রা বাড়তে পারে ৫ ডিগ্রি পর্যন্ত।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply