গুজরাটে স্ট্রিট ফুড হিসেবে আমিষ জাতীয় খাবার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ায় চলছে তুমুল বিতর্ক। গুজরাটের আহমেদাবাদ, রাজকোট ও ভাবনগর পৌরকর্তৃপক্ষ কয়েকদিন আগে প্রকাশ্যে আমিষ বিক্রি ও খাওয়ার ওপরে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়, পৌর এলাকার রাস্তার পাশে, মন্দির ও স্কুলের অন্তত ১০০ মিটারের মধ্যে আমিষজাতীয় খাবার বিক্রি ও খাওয়া যাবে না। প্রকাশ্যে আমিষ জাতীয় খাবার বিক্রি-খাওয়া ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার শামিল বলে ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
বিজেপি শাসিত গুজরাটের কয়েকটি পৌর কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব ভারতীয়রা। তাদের সমালোচনার তীর দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির দিকে।
সমালোচনার মুখে গুজরাট রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাস্তা, মন্দির ও স্কুলের পাশে আমিষজাতীয় খাবার বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া বিজেপির দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। এটি কয়েকটি পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। বিজেপি পৌর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিষেধাজ্ঞা বাতিলের আহ্বান জানাবে।
এদিকে সমালোচনার মুখে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভুপেন্দ্র প্যাটেল বলেছেন, আমিষ খাওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের কোনো আপত্তি নেই। এমনকি রাস্তার পাশে, স্কুল বা মন্দির এলাকায় খাবার বিক্রি নিয়েও কোনো বিধিনিষেধ নেই। অস্বাস্থ্যকার খাবার বিক্রির বিরূদ্ধে রাজ্য সরকারের অবস্থান জোরালো হবে।
তবে তাতেও বন্ধ হয়নি সমালোচনা। গুজরাটে বসবাসরত বাঙালি সৌম্য ঘটক বলেন, কর্মসূত্রে আমি গান্ধিনগরে থাকি। সেখানে যে বাড়িতে ভাড়া থাকি, সেখানে ডিম খেলেও ভয়ে ভয়ে খেতে হয়।
এদিকে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও মুখ্যমন্ত্রী তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার পর গুজরাটের পৌরসভার মেয়ররা জানিয়েছেন যে, তারা জোর করে আমিষ বিক্রি বন্ধ করবেন না। তবে আমিষ প্রকাশ্যে বিক্রি করলে ঢেকে রাখতে হবে এবং কেনার পর তা প্রকাশ্যে খাওয়া যাবে না।
এদিকে, গুজরাটের রাজ্য বিজেপির আইটি সেলের সাবেক প্রধান জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী আমিষ খান না, তবে তিনি আমিষ বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেননি। এটা শুধু খাবার বা খাদ্যাভ্যাসের প্রশ্ন না। এর সাথে অসংখ্য মানুষের রুটি-রুজির প্রশ্ন জড়িত। এমন নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ আমিষের ব্যবসা করেন এমন অসংখ্য মানুষের জীবনের সাথে জড়িত।
Leave a reply