ভোট হবে ইভিএম-এ, আর সেখানে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রায় ৭৬ লাখ পাকিস্তানি। এমন নীতির অনুমোদন দিয়ে বুধবার পাকিস্তানি পার্লামেন্টে পাশ হলো ২০১৭ ও ২০২১ সালের দুইটি নির্বাচনী আইনের সংশোধন বিল।
এদিকে বিল পাশকে কেন্দ্র করে তুমুল হট্টগোল দেখা দেয় পাকিস্তানের পার্লামেন্টে। নামেমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এমন সিদ্ধান্ত নেয়ায় সরকারি দলের ওপর বেজায় নাখোশ বিরোধী দলগুলো। ঝাঁজালো প্রতিবাদের পাশাপাশি সংশোধনী প্রস্তাবের কপি ছিঁড়ে ফেলতেও দেখা গেছে। এমনকি সরকার ও বিরোধীদলের সাংসদদের মধ্যে শারীরিক সংঘর্ষ এড়াতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সশস্ত্র ব্যক্তিকেও মধ্যস্থতা করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত অধিবেশনের মধ্যেই ‘ওয়াক-আউট’ করেছেন বিরোধীরা।
শুধু নির্বাচনী আইনই নয়, এই অধিবেশনে সিদ্ধান্ত হয়েছে পাকিস্তানে আটক ‘ভারতীয় গুপ্তচর’ কুলভূষণ যাদবকে নিয়েও। আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে ফলপ্রসূ করতে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও সাজা পুনর্বিবেচনা করা হবে।
এদিকে ইভিএম মেশিনকে ‘ইভিল (শয়তান)’ ও ‘ভিশাস (হিংস্র)’ যন্ত্র বলে অভিহিত করেন পাকিস্তান মুসলিম লীগের নওয়াজপন্থী অংশের প্রধান শাহবাজ শরীফ। এই আইনকে ‘কালো আইন’ হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি এই বক্তব্যের জবাবে বলেন, এই কালো আইন নয়, বরং অতীতের সব ‘কালো’কে ধুয়েমুছে সাফ করতেই এই আইন! আর ইভিএম ‘ইভিল’ও নয়, ‘ভিশাস’ও নয়। বরং ‘ইভিল ও ভিশাস’ নীলনকশাকে কবর দেবে এই আইন।
এদিকে প্রবাসীদের ভোটাধিকার দেয়া প্রসঙ্গে বেনজির-পুত্র বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেন, প্যারিস, ক্যালিফোর্নিয়া বা ব্রিটেনে বসে থাকা একটা পাকিস্তানি কীভাবে করাচি বা উপজাতীয় এলাকার মানুষের ভালোমন্দ ঠিক করে দেবে? তাদের আলাদা নির্বাচনী এলাকা থাকা উচিত।
প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে সাংসদদের এমন পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের পর প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের উপদেষ্টা বাবর আওয়ান চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য উত্থাপন করেন এই বিল। এরপর এর পক্ষে ২২১ জন এমপি দাঁড়ালে ও ২০৩ জন এমপি এর বিপক্ষে বসে থাকলে ন্যুনতম সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পার্লামেন্টে পাশ হয় এই বিল।
Leave a reply