স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা:
নেত্রকোণার একটি বাসা থেকে বাবা–ছেলের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছ। শুক্রবার (১৯ নবেম্বর) বেলা ১২টার দিকে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে লাশ দুটির ময়নাতদন্ত করেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা শ্রদ্ধানন্দ নাথ এবং টিটু রায়।
চিকিৎসক শ্রদ্ধানন্দ নাথ মুঠোফোনে জানান, তাদের মৃত্যুর কারণ এখনও আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের মৃত্যুর বিষয়টি স্পষ্ট না হওয়ায় দুজনেরই ভিসারা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ দিকে, শিশুটির মা ছালমা খাতুনকে (২১) এখনও থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে পুলিশি হেফাজতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, ছালমা খাতুনকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তার কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় শহরের নাগড়া এলাকার একটি ভবনের চারতলা থেকে পুলিশ আবদুল কাইয়ুম সরদার (৩২) ও তার দুই বছরের ছেলে আহনাব শাকিলের লাশ উদ্ধার করা হয়। আবদুল কাইয়ুম সরদারের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার গোপালের খামার গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আক্কাস সরদারের ছেলে। তিনি নেত্রকোণায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করতেন। নেত্রকোনা শহরের নাগড়া এলাকার স্ত্রী-সন্তানসহ ভাড়া থাকতেন কাইয়ুম।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আবদুল কাইয়ুম সরদার ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ফকিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আসাদ আলীর মেয়ে ছালমা খাতুনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে কাইয়ুম সরদার স্ত্রীকে নিয়ে তার কর্মস্থল নেত্রকোনায় বসবাস করছিলেন। ওই বছরের ডিসেম্বরে তাদের ছেলের জন্ম হয়।
আবদুল কাইয়ুমের স্ত্রী ছালমা খাতুনের ভাষ্য, প্রতিদিনের মতো গত বুধবার রাতে খাবার খেয়ে তারা এক বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটায় জেগে উঠে পাশের কক্ষে একটি ফ্যানের সঙ্গে স্বামী ও সন্তানের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি। পরে তিনি রশি কেটে নিজেই লাশ দুটি নামিয়ে ফেলেন। এরপর বাসার দরজা খুলে বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন।
নেত্রকোণা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বলেন, বিষয়টি আমরা খুবই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত রহস্যের জট খুলবে।
Leave a reply