স্থানীয় প্রতিনিধি, বেনাপোল:
যশোরের সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শার পুটখালি ও গোগা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে ঘিরে আতঙ্ক বিরাজ করছে গোটা এলাকায়। বোমা হামলা, ভাঙচুর আর গোলাগুলির ফলে নির্ভয়ে ভোট দেয়া নিয়েই সংশয়ে প্রার্থী ও ভোটাররা।
আজ শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে গোগা ইউনিয়নে নির্বাচনের পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রশিদ ও তবিবুর রহমানের সমর্থন এর মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন তবিবুর রহমানের সমর্থন ফজের আলী (৩৫) ও আশরাফুল ইসলাম (৪০) গুলিবিদ্ধ হন। তাদেরকে উদ্ধার করে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদরুল আলম। ফজের আলী শার্শা থানার গোগা ইউনিয়নের অগ্রভুলোট গ্রামের ময়নুদদীন এর ছেলে ও আশরাফুল একই গ্রামের আজিবার রহমানের ছেলে।
মামলা জটিলতার কারণে শার্শা উপজেলার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে ১টি ইউনিয়নে ভোট হচ্ছে না। বাকি যে ১০টি ইউনিয়নে ভোট হবে, সেগুলো হলো- শার্শা, উলাশী, বাগআচড়া, কায়বা, গোগা, পুটখালি, লক্ষ্মণপুর, ডিহি, নিজামপুর ও বাহাদুরপুর। এদের মধ্যে পুটখালি ও গোগা নির্বাচনী এলাকাকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এ দুটি ইউনিয়নে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হামলা, পাল্টা-হামলা, অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ ঘটছে বোমা হামলার ঘটনা।
গোগা ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আব্দুর রশিদ ও আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তবিবর রহমান তবি। এদিকে পুটখালি ইউনিয়নে নৌকার প্রতীক নিয়ে আবদুল গফ্ফার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন মো. নাসির উদ্দিন। এই ইউনিয়নেও হামলা, পাল্টা-হামলা, ভাঙচুর,অগ্নিসংযোগ ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটছে প্রায়শই। বৃহস্পতিবার রাতেও পুটখালি ইউনিয়নে আনারস মার্কার অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। নৌকার প্রার্থী আব্দুল গফ্ফার জানান, নির্বাচনী প্রচারণায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরাই আমার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে, বাধা দিচ্ছে।
আনারস মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাছির উদ্দিন জানান, নৌকার প্রার্থী আব্দুল গফ্ফার তার গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে আমার নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করেছে। আমার কর্মীদের ওপরও হামলা হয়েছে। আমার নেতা কর্মীদের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন করতে দিচ্ছে না। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে- তার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
নাছির উদ্দিন আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার রাতে বিত্তিআচড়া ও বালুন্ডা গ্রামে তার নির্বাচনী অফিসে বোমা হামলা হয়েছে।
পুটখালি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন জানান, পুটখালি ইউনিয়নের ভোট নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে। ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে তাদের ভোট দিতে পারে- সেটি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি। কেউ যেন ভোট কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাই অথবা ভোট ডাকাতি করতে না পারে- সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকারও আহ্বান করছি।
শার্শা উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, শার্শা উপজেলার মোট ১০ টি ইউনিয়নে ভোট হচ্ছে আগামী ২৮ নভেম্বর। পুটখালি ইউনিয়েনে মোট ভোটার সংখ্যা ২২ হাজার ১৮৫ এবং গোগা ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ৭৫০। আমরা ভোট নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। একই প্রচেষ্টার অঙ্গীকার প্রতিধ্বনিত হয় বেনাপোল বন্দর থানার ওসি মামুন খানের ভাষ্যেও। পুটখালি ইউনিয়নে রাতে বোমা হামলা ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও নিরপেক্ষ ভোট নিশ্চিত করতে সব কিছু করছি।
Leave a reply