স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা:
৯ বছরের শিশু। যে বয়সে তার অন্য শিশুদের সাথে খেলে বেড়ানোর সময়, সেই বয়সে বড়দের সাথে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছে। সেটিও নির্মম এক উপলক্ষে, ‘বাবা হত্যার বিচার চাই’ ব্যানার নিয়ে! নেত্রকোণার মদন উপজেলার খাগুরিয়া গ্রামের আসাদুল হত্যার বিচারের দাবিতে শনিবার উপজেলা পরিষদে আয়োজিত মানববন্ধনে তার শিশুসন্তান জিরাতুল ইসলামের উপস্থিতিতে তৈরি হয়েছে এমনই এক আবেগঘন দৃশ্য।
এর আগে শনিবার সকালে আসাদুলের লাশ তার নিজ বাড়িতে দাফন করা হয়। দাফন শেষে বিকেলে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে খাগুরিয়া গ্রামের সচেতন ছাত্র ও যুব সমাজের আয়োজনে মদন উপজেলা পরিয়দের সামনের সড়কে ঘন্টাব্যাপী এক মানববন্ধন অনুষ্টিত হয়। সেখানে নিহতের ছেলে জিরাতুল ইসলাম তার ৭ বছর বয়সী ছোট বোন প্রিয়া আক্তার, ৪ বছর বয়সী বোন আখি মনি ও ৮ মাস বয়সী বোন লাকী কে কুলে নিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে বিচারের দাবি জানায়।
পুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, মদনের খাগুরিয়া গ্রামের আপেষ মিয়ার ছেলে রংমিস্ত্রি সাইফুল ইসলাম দ্বিতীয় বিয়ে করে চট্টগ্রামে বসবাস শুরু করেন। তার প্রথম স্ত্রী রুনা আক্তারের সঙ্গে আসাদুলের ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু বিষয়টি সাইফুলের ছোট ভাই মো. আল আমিন ভালোভাবে নেননি। এ নিয়ে ৭ নভেম্বর রাতে মো. আল আমিন তার সহযোগী মো. জুয়েল মিয়াসহ কয়েকজন হামলা চালিয়ে আসাদুলকে কুপিয়ে জখম করেন।
পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ওই হাসপাতাল থেকে একটি বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
এ দিকে ঘটনার পর দিন রাতে আসাদুলের বাবা আলতু মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মদন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একই গ্রামের আপোষ মিয়ার ছেলে জুয়েলকে ঢাকা থেকে বুধবার (১০ নভেম্বর) গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে। পূর্বের দায়েরকৃত মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
Leave a reply