সন্তানের খাবারের টাকা পরিশোধের অনুরোধ সহকর্মীকে, উদ্ধার বাবা-ছেলের লাশ

|

স্টাফ রিপোর্টার, নেত্রকোণা:

নেত্রকোণার একটি বাসা থেকে বাবা–ছেলের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় একটি ই-মেইল সামনে এসেছে। মৃত্যুর আগে গত বুধবার (১৭ নভেম্বর) রাত তিনটা ৫৭ মিনিটে নিহত আবদুল কাইয়ুম সরদার (৩২) তার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে একটি ই-মেইল পাঠান। রোববার (২১ নভেম্বর) সকালে ওই মেইলটি পুলিশের হাতে এসেছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১২টায় শহরের নাগড়া এলাকার একটি ভবনের চারতলা বাসা থেকে আবদুল কাইয়ুম সরদার ও তার দুই বছরের ছেলে আহনাব শাকিলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় একই বাসার পাশের ঘরে থাকা তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে এরই মধ্যে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরপরই এই মেইল হাতে আসে পুলিশের।

এ নিয়ে নেত্রকোণা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, মৃত্যুর আগে কাইয়ুম তার অফিসের সহকারী পরিচালক মো. আবদুর রশিদের কাছে একটি মেইল পাঠান। তাতে আর্থিক ঋণের কথা উল্লেখ করেছেন কাইয়ুম। নিজের শারীরিক অক্ষমতার কথাও লিখেছেন।

ওসি শাকের আহমেদ জানান, চিঠির এক স্থানে কাইয়ুম উল্লেখ করেছেন, শহরের একটি সোনার দোকানে গহনার জন্য ৩০ হাজার টাকা বায়না দেয়া আছে। সেই টাকা এনে একটি দোকানে শিশুর খাবার নেয়ায় বাকি পড়া ৬ হাজার ৬০০ টাকা পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করেন আবদুর রশিদকে। ওসি জানান, তারা বিভিন্ন বিষয় তদন্ত করছেন।

নেত্রকোণা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বলেন, আমরা একটি মেইল পেয়েছি। এই মেইলে আবদুল কাইয়ুম সুইসাইডের কথা লিখেছেন। ধারণা করা হচ্ছে তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। মেইলে বিভিন্ন বিষয় তিনি উল্লেখ করেছেন। আমরা তা তদন্ত করছি। কিন্তু শিশুটিকে কেনো শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় তা তদন্ত করা হচ্ছে। আমরা শিশুটি ও তার বাবার ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য গবেষণাগারে পাঠিয়েছি।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সকালে কাইয়ুম ও তার দুই বছরের শিশুর মৃত্যুর খবর শুনে পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আবদুল কাইয়ুমের স্ত্রী ছালমা খাতুন জানিয়েছিলেন, প্রতিদিনের মতো গত বুধবার রাতে খাবার খেয়ে একটার দিকে তারা এক বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন। গত বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটায় জেগে উঠে পাশের কক্ষে একটি ফ্যানের সাথে স্বামী ও সন্তানের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি।

পরে তিনি রশি কেটে লাশ দুটি নামিয়ে ফেলেন। এরপর বাসার দরজা খুলে বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান। স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে ছালমাকে আটক করা হয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply