অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ইউরোপে পাঠাতে নতুন নতুন পথ বেছে নিচ্ছে পাচারকারীরা। ব্যবহার করছে নিত্যনতুন কৌশল। উত্তর আফ্রিকা থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢোকার প্রচলিত পথের বদলে তুরস্ক হয়ে যাওয়া হচ্ছে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্যালাব্রিয়া উপকূলে।
আফগানিস্তানের ইজমির থেকে ইতালি। মাঝে ইরান ও তুরস্ক পাড়ি দিয়ে প্রায় তিন মাসের ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রা। সম্প্রতি এই পথেই ক্যালাব্রিয়া উপকূলে পৌঁছেছে অভিবাসন প্রত্যাশীদের বেশ কয়েকটি দল। মূলত চোরাকারবারীদের রুট হলেও এখন মানবপাচারেও ব্যবহার হচ্ছে এই পথ।
পশ্চিমের উন্নত জীবনের আশায় এই পথ বেছে নিচ্ছেন আফগানিস্তান, ইরাক আর ইরানের ধনী ও শিক্ষিত লোকজন। কেবল রুট পরিবর্তন নয়, ডিঙ্গি নৌকার পরিবর্তে ব্যবহার হয় বিলাসবহুল ভ্রমণতরী। খরচ কিছুটা বেশি হওয়ায় গুণতে হয় জনপ্রতি প্রায় ১০ হাজার ডলার। তবে টহল বাহিনীর নজর এড়াতে জাহাজের ডেকে গাদাগাদি করে রাখা হয় অভিবাসনপ্রত্যাশীদের। তোলা হয় ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ যাত্রী। এরকমই এক যাত্রী, হামিদ বলেন, গর্ভবতী নারী, শিশুসহ ১০৫ জন ছিল তাদের জাহাজে। এই সংখ্যা জাহাজটির ধারণক্ষমতার ১০ গুণ। এক সপ্তাহের সমুদ্রযাত্রায় শেষ দুদিন কোনো পানি ছিল না। সাগরের পানি তুলে চিনি দিয়ে লবন সরিয়ে সেই পানি পান করেছি, বলেন হামিদ।
এই রুটে মানবপাচারে জড়িত চক্রটি মূলত ইউক্রেনভিত্তিক। তবে তুরস্ক আর ইতালির মাফিয়াদের সাথে এদের যোগাযোগ রয়েছে বলে ধারণা ক্যালাব্রিয়া কর্তৃপক্ষের। এক সপ্তাহের মতো জাহাজের ট্রিপ দিয়েই মানবপাচারকারীদের আয় ৫ লাখ ৬২ ডলারের বেশি। প্রতিটি নৌকায় শতাধিক মানুষকে গাদাগাদি করে নিচ্ছে। অথচ উপর থেকে শুধু নাবিকদের দেখা যায়। এই জাহাজগুলো আটকানো কঠিন। বিলাসবহুল বলে দূর থেকে সন্দেহের তেমন সুযোগ নেই।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত অবৈধ পথে ক্যালাব্রিয়ায় পৌঁছেছে ৯ হাজার ৬৮৭ জন। যা গত বছরের তুলনায় ৪ গুণ বেশি।
Leave a reply