শিরোনাম দেখে মনে হতেই পারে, এইডস থেকে মুক্তি পাওয়ার বিরল ঘটনা এই প্রথম ঘটলো কিনা। বিস্ময়করভাবে উত্তরটি হচ্ছে, ‘না’। এর আগেও দুজন এইডস আক্রান্তের দেহে ভাইরাস নিষ্ক্রিয় বা এইচআইভি নেগেটিভ হবার মেডিকেল রেকর্ড আছে!
কিন্তু ঐ দুজন ছিলেন ব্লাড ক্যান্সার আক্রান্ত। কেমো থেরাপি আর রেডিও থেরাপি নিতে নিতেই ঘটনাক্রমে তাদের দেহ থেকে বিদায় নেয় এইচআইভি ভাইরাস। কিন্তু আলোচ্য কানাডিয়ান নারী ঠিক এই জায়গাটিতেই বিশেষ। কেননা, তার দেহে এইচআইভির অস্তিত্ব দূর হয়েছে গুরুতর কোনো থেরাপি গ্রহণ ছাড়াই!
৩০ বছর বয়সী ওই নারী বর্তমানে কানাডায় বসবাস করলেও তার আদি নিবাস আর্জেন্টিনায়। সেখান থেকে ২০১৩ সালে কানাডায় এসে বসবাস শুরু করেন তিনি। দেশটির অন্যান্য এইডস রোগীদের মতোই কম্বাইন্ড মেডিসিন থেরাপির দেওয়া হচ্ছিল তাকে। এতেই বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ তিনি!
চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সাময়িকী ‘ইন্টার্নাল মেডিসিন’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য। সেই সাময়িকীর বরাত দিয়ে মঙ্গলবার প্রতিবেদন করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। গবেষণা নিবন্ধে অবশ্য ঐ নারীর নাম উল্লেখ করা হয়নি। এর বদলে তাকে সম্বোধন করতে ‘এলিট কন্ট্রোলার’ অভিধা ব্যবহার করা হয়েছে।
ঐ নিবন্ধে গবেষক জু ইউ ও নাতালিয়া রৌসেফ বলেন, আমরা এলিট কন্ট্রোলারের রক্ত ও টিস্যু সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছি। কোনো বিশেষ রাসায়নিক বা ওষুধের অস্তিত্ব পাইনি। এ থেকে নিঃসন্দেহে এটি বলা যায়, প্রাকৃতিকভাবেই তার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলেছে।
তারা আরও বলেন, মানবদেহে এইডসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার ইতিহাস থেকে এ পর্যন্ত ওই নারীই একমাত্র এইডসরোগী, যিনি প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এইডস রোগের চিকিৎসা বিষয়ক গবেষণায় এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ এবং এর মধ্যে দিয়ে এইডসকে পরাস্ত করতে বিজ্ঞানীদের সামনে একটি নতুন পথ তৈরি হলো।
ঐ নারীর ডিএনএ বিশ্লেষণ করে আরও জানা গেছে, শ্বেতাঙ্গ বা ইউরোপীয় জনগোষ্ঠীভুক্তদের মাত্র ১% এইচআইভির সংক্রমণ থেকে বিরলতম ‘প্রাকৃতিক সুরক্ষা’ ভোগ করেন।
Leave a reply