মানব পাচারের মূল কারণ বের করে তা সমাধানের আহ্বান বাংলাদেশের

|

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

মানব পাচারের মূল কারণগুলো খুঁজে বের করে তা সমাধানের আহ্বান জানালো বাংলাদেশ।

মানব পাচারের মূল কারণগুলো বিশেষ করে জলবায়ুজনিত নাজুক পরিস্থিতি এবং সংঘাত ও বাস্তুচ্যুতির মতো বহুমূখী কারণে সৃষ্ট মানব পাচারের কারণগুলো খুঁজে বের করে তা সমাধান ও রোধ করতে হবে। আজ বুধবার (২৪ নভেম্বর) মানব পাচার রোধে জাতিসংঘের বৈশ্বিক কর্ম পরিকল্পনার মূল্যায়নের উপর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আয়োজিত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় প্রদত্ত বক্তব্যে এ কথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমনে শক্তিশালী আইনী কাঠামো, বহু-অংশীজনের অংশীদারিত্ব ও কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপর গুরুত্বারোপ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি আরও বলেন, মানব পাচার একটি গুরুতর অপরাধ যা মানবাধিকার ও মানবিক মর্যাদার মৌলিক নীতিগুলোর পরিপন্থী।

মানব পাচার রোধে শেখ হাসিনা সরকার গৃহীত বিভিন্ন আইন, নীতি ও প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, শ্রমিক পাচারসহ মানব পাচার ও চোরাচালানের মধ্যে যে যোগসাজস রয়েছে তা আমলে নিয়েই আমরা জাতীয় পর্যায়ে মানব পাচার বিরোধী কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকি। এছাড়া এ বিষয়ক আইন প্রণয়নে আমরা পালারমো প্রটোকল অনুসরণ করেছি। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে জাতীয় কর্মপরিকল্পনাকে এসডিজি বাস্তবায়ন পরিকল্পনা ও জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার সাথে সন্নিবেশিত করেছে যা মানব পাচার রোধে ভূমিকা রেখেছে। পাচারের শিকার ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা প্রদান ও এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে এনজিও, সুশীল সমাজসহ অন্যান্য সংস্থাসমূহের কাজের স্বীকৃতি প্রদান করেন তিনি।

বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা সম্প্রদায় মানব পাচারের ঝুঁকিতে রয়েছে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি এর মূল কারণ হিসেবে প্রত্যাবাসনের কোনো অগ্রগতি না থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন যা রোহিঙ্গাদের ক্রমাগতভাবে হতাশায় নিমজ্জিত করছে। তিনি শ্রমিক পাচার হ্রাসে শ্রম অভিবাসনের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান। বিভিন্ন অনানুষ্ঠানিক খাত এবং নিজ দেশে ফেরত অভিবাসীদের উপর কোভিড এর ভয়াবহ প্রভাবের উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা উপযুক্ত জীবিকার সুযোগ ও রাষ্ট্রসমূহের কোভিড পুনরুদ্ধার পরিকল্পনায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

মানব পাচার প্রতিরোধ বিষয়ক সাধারণ পরিষদের রেজল্যুশনের আওতায় দুইদিন ব্যাপী উচ্চ পর্যায়ের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মানব পাচার প্রতিরোধে বৈশ্বিক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হয়। সভায় এ বিষয়ক একটি রাজনৈতিক ঘোষণা গৃহীত হয়। মূল আয়োজনের পাশাপাশি বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, নাইজেরিয়া, কাতার, যুক্তরাজ্য ও ইউএনওডিসি একটি উচ্চ পর্যায়ের সাইড ইভেন্ট আয়োজন করে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply