রিয়াজ রায়হান:
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে হত্যার হুমকি আর পরিকল্পনার একটি অডিও ক্লিপ এসেছে যমুনা নিউজের হাতে। যেখানে, যেকোনো সময় তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হলেও নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা কখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাননি তিনি। বেশ লম্বা সময় গতিবিধির ওপর নজর রেখেই তাকে খুন করা হয় বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। আর বিশ্লেষকদের মত, আরসার সাথে মুহিবুল্লার দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো আর সেটির জেরে এই হত্যাকাণ্ড। যা প্রভাব ফেলেছে প্রত্যাবাসনে।
ঘটনার দিন এশার নামাজ শেষে মুহিবুল্লাহকে তার ঘরে দিয়ে চলে যায় তার সঙ্গে থাকা এপিবিএন সদস্যরা। এর কিছুক্ষণ পরই ঘটে হত্যাকাণ্ড। ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা এপিবিএন কর্মকর্তারা বলছেন, ঠিক যে সময়ে মুহিবুল্লাহর সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য থাকে না সে সময়ই বেছে নিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। কখনও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্নও ছিলেন না মুহিবুল্লাহ। প্রত্যাবাসন আর ক্যাম্পের আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্বই হত্যাকাণ্ডের কারণ বলে মনে করেন ১৪ এপিবিএন অধিনায়ক নাইমুল হক।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, এই খুনের পরিকল্পনা হয় ২০১৬ সালে। মিয়ানমার আর্মি সমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির মংডু সভাপতি হওয়ার পরই আরসার সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয় মুহিবুল্লাহর। পরের বছর বাংলাদেশে আসার পর প্রত্যাবাসন ইস্যুতে দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়। এর আগেও কয়েকবার হামলার চেষ্টা হয় তার ওপর। মৃত্যুর আগে প্রতিটি ক্যাম্পে আরসাসহ বিচ্ছিন্ন কয়েকটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের তালিকাও করছিলেন মুহিবুল্লার কর্মীরা। এ নিয়েও বেশ ক্ষুব্ধ ছিলো প্রতিপক্ষ।
প্রশ্ন হচ্ছে মুহিবুল্লাহ হত্যা কি প্রভাব ফেলবে রোহিঙ্গা সংকটে? চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও শরণার্থী বিশেষজ্ঞ ড. রাহমান নাসির উদ্দিন বলছেন, নতুন করে নেতৃত্ব সংকটে পড়ায় রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে প্রত্যাবাসনের পক্ষে জোরালো ভূমিকা কে রাখবে সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। তবে এ নিয়ে এখনই বড় ধরনের শঙ্কার কারণ নেই বলেও মনে করেন এই বিশ্লেষক।
Leave a reply